“যদি দরকার হয়, কলেজের অবকাশের পর আমি এই বিষয়ে সরকারী—
সুতরাং অধিকতর কেতাদুরস্ত—পত্র লিখিব।”[১]
এই পত্রখানিতে সুফল ফলিয়াছিল। বিদ্যাসাগর নিজের ব্যবস্থিত শিক্ষাপ্রণালী অনুসরণ করিবার স্বাধীনতা লাভ করিয়াছিলেন। তাঁহার শিক্ষাপ্রণালী যে সুফলপ্রসূ হইয়াছিল, তাহা না বলিলেও চলে। এই সাফল্যের একটি প্রধান কারণ,—নিজের তাঁবে ঠিক ধরণের লোক বাছিয়া লইবার অদ্ভুত ক্ষমতা বিদ্যাসাগরের ছিল। সংস্কারের ফলে বিদ্যালয়ের ছাত্র-সংখ্যা যথেষ্ট পরিমাণে বাড়িয়া গিয়াছিল। শিক্ষা-পরিষদ সন্তুষ্ট হইয়া ১৮৫৪, জানুয়ারি মাস হইতে দ্বিদ্যাসাগরের বেতন বাড়াইয়া তিন শত টাকা করিয়া দেন।
রাজকর্ম্মচারীরা বিদ্যাসাগরকে সম্মান করিয়া চলিতেন। শিক্ষাবিষয়ক কার্যে তাঁহারা পণ্ডিতের পরামর্শ করিতেন। সিভিলিয়ানদিগকে প্রাচ্যতা শিক্ষা দিবার জন্য প্রতিষ্ঠিত ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ ভাঙিয়া ১৮৫৪ জানুয়ারি মালে বোর্ড অফ একজামিনার্স গঠিত হইলে বিদ্যাসাগরকে বোর্ডের একজন কর্ম্মী-সদস্য করিয়া লওয়া হইয়াছিল। শিক্ষা-পরিষদের সদস্য ও বাংলার প্রথম ছোটলাট ফ্রেডারিক্ হ্যালিডে বিদ্যাসাগরের গুণমুগ্ধ ছিলেন। তাঁহার আদেশ অনুসারে পরিষদ বারাসতের নিকটবর্ত্তী বামুনমুড়া বঙ্গবিদ্যালয় প্রদর্শন করিতে বিদ্যাসাগরকে পাঠাইয়াছিলেন (জুলাই, ১৮৫৪)।[২]
শুধু পণ্ডিত নয়, বিদ্যাসাগর সাহিত্য-রসিক ছিলেন। বাংলার বহু সাহিত্য-প্রতিষ্ঠানের সহিত তিনি কোনো-না-কোনরূপে সংশ্লিষ্ট ছিলেন।