পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলা-শিক্ষা প্রচলনে বিদ্যাসাগরের প্রচেষ্টা
২৯

 বাংলায় ছোটলাটের পদ সৃষ্টি হইল (১ মে, ১৮৫৪); প্রথম ছোটলাট হইলেন—ফ্রেডারিক জে. হ্যালিডে। এই পদে প্রতিষ্ঠিত হইবার দুই মাস পূর্ব্বে শিক্ষা-পরিষদের সদস্যরূপে হ্যালিডে বাংলার শিক্ষা-সম্বন্ধে তাঁহার মত একটি মিনিটে ব্যক্ত করিয়াছিলেন (২৪ মার্চ্চ)। শিক্ষা-পরিষদ-প্রদত্ত কাগজপত্র পর্যালোচনা করিয়া হ্যালিডে স্থির করিলেন, তিনি নিজে যে-প্রণালী পূর্ব্বে নির্দ্ধারিত করিয়াছেন তাহাই সর্ব্বোৎকৃষ্ট। বড়লাটের গ্রহণার্থ ইহাই তিনি অনুমোদন করিয়া পাঠাইলেন (১৬ নভেম্বর)। হ্যালিডের মিনিটের অংশ-বিশেষ উদ্ধৃত করা গেল:—

“২। বঙ্গদেশে অসংখ্য দেশীয় ধরণের পাঠশালা আছে। ইউরোপীয় এবং এ-দেশীয়—উভয় শ্রেণীর ভদ্রলোকের কাছে বিশেষ অনুসন্ধান করিয়া জানিয়াছি, পাঠশালাগুলির অবস্থা অতি শোচনীয়, কারণ শিক্ষকের কার্য্য অতি অযোগ্য লোকের হাতেই গিয়া পড়িয়াছে।
“৩।  এই পাঠশালাগুকে যথাসম্ভব উন্নত করিয়া তোলা আমাদের উদ্দেশ্য হইবে। এ বিষয়ে উত্তর-পশ্চিম প্রদেশের পূর্ব্বতন ছোটলাটের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করাই শ্রেয়। পাঠশালাগুলির আদর্শস্বরূপ কতকগুলি মডেল স্কুলের ব্যবস্থা করা দরকার। নিয়মিত পরিদর্শনের ব্যবস্থা করিলে, গুরুমহাশয়েরা আদর্শের প্রেরণায় ক্রমশ পাঠশালাগুলিকে উন্নত ধরণে গড়িয়া তুলিতে চেষ্টা করিবে।
“৫। এই বিষয় সম্বন্ধে সংস্কৃত কলেজের সুদক্ষ অধ্যক্ষ পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের লেখা এক মন্তব্য সংযুক্ত হইল। একথা সকলেই জানেন, ইনি বাংলা-শিক্ষা প্রচারকার্য্যে বহুদিন হইতেই অত্যন্ত উৎসাহী। সংস্কৃত কলেজে নব ব্যবস্থা প্রবর্ত্তিত করিয়া এবং বিদ্যালয়ের পাঠ্য প্রাথমিক পুস্তক-সমূহ রচনা করিয়া এ-সম্বন্ধে ইনি যথেষ্ট কাজ করিয়াছেন।