পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/১০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাঙ্গালার ইতিহাস—দ্বিতীয় ভাগ br(? প্রার্থনায়, ইংলণ্ডেশ্বরের নিকট দরখাস্ত দিবার নিমিত্ত, এক জন ইঙ্গরেজ উকীলকে ইংলণ্ডে পাঠাইয়া দিলেন। কিন্তু তথাকার রাজমন্ত্রীরা, সহগমনের অনুকূল যুক্তি সকল শ্রবণগোচর করিয়া, পরিশেষে নিবারণপক্ষই দৃঢ় করিলেন। বহু কাল অতীত হইল, সহমরণ রহিত হইয়াছে ; এই দীর্ঘ কাল মধ্যে, প্রজাদিগের অসন্তোষের কোনও লক্ষণ লক্ষিত হয় নাই । ফলত, এক্ষণে এই নিষ্ঠুর ব্যবহার প্রায় সকলে বিস্তৃত হইয়াছেন । যদি ইহা ইতিহাসগ্রন্থে উল্লিখিত না থাকে, তাহ হইলে, উত্তরকালীন লোকেরা, এরূপ নৃশংস ব্যবহার কোনও কালে প্রচলিত ছিল, এ বিষয়ে, বোধ হয়, প্রত্যয় করিবেক না । ১৮৩১ সালে, বিচারালয়ের রীতির অনেক পরিবর্ত আরব্ধ হইল। বাঙ্গালির, এ পৰ্য্যন্ত, অতি সামান্য বেতনে নিযুক্ত হইয়া, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মোকদ্দমার বিচার করিতেন । লার্ড উইলিয়ম বেটিক, দেশীয় লোকদিগের মান সন্ত্রম বাড়াইবার নিমিত্ত, তাহাদিগকে উচ্চ বেতনে উচ্চ পদে নিযুক্ত করিতে মনন করিলেন । এই বৎসরে, মুন্সেফ ও সদর আমীনদিগের বেতন ও ক্ষমতার বৃদ্ধি হইল ; এবং, উচ্চতর বেতনে, অতি সন্ত্রান্ত প্রধান সদর আমীনী পদ নূতন সংস্থাপিত হইল। দেওয়ানী বিষয়ে প্রধান সদর আমানদিগের যথেষ্ট ক্ষমতা হইল। রেজিষ্টরের পদ ও প্রবিন্সল কোর্ট উঠিয়া গেল ; কেবল দেশীয় বিচারকের ও জিলাজজের পদ, এবং সদরদেওয়ানী আদালত, বজায় থাকিল । ফলিতাৰ্থ এই যে, মোকদমার প্রথম শ্রবণ ও তাহার নিম্পত্তি করণের ভার দেশীয় বিচারকদিগের হস্তে অপিত হইল ; আর, জিলার ইঙ্গরেজ জজদিগের উপর কেবল আপীল শুনিবার ভার রহিল। লার্ড উইলিয়ম বেটিক, ফৌজদারী আদালতেও, অনেক সুরীতির স্থাপন করেন । পূৰ্ব্বে, দায়রার সাহেবের ছয় মাসে এক বার আদালত করিতেন ; কিয়ং কাল পরে, কমিসনর সাহেবের তিন মাসে এক বার। এক্ষণে এই হুকুম হইল, সিবিল ও সেশন জজেরা, প্রতি মাসে, এক এক বার বৈঠক করিবেন। কয়েদী আসামী ও সাক্ষীদিগকে যে অধিক দিন ক্লেশ পাইতে হইত, তাহার অনেক নিবারণ হইল। ফলতঃ, কাৰ্য্যদক্ষ লার্ড উইলিয়ম বেটিক বাহাদুরের অধিকারকালে, যে নানা স্থনিয়ম সংস্থাপিত হয়, সে সমুদয়েরই প্রধান উদ্দেশ্য এই, দেশীয় লোকদিগের মান সন্ত্রম বাড়ে, ও সুশৃঙ্খল রূপে কাৰ্য্যনিৰ্ব্বাহ হয় । ১৮৩১ খৃঃ অব্দে, রাজ রামমোহন রায় ইংলণ্ডে গমন কবেন । তিনি কোম্পানি সংক্রান্ত অনেক সম্রাস্ত কৰ্ম্ম করিয়াছিলেন ; সংস্কৃত, আরবী, পারসী, উর্দু, হিব্রু, গ্রীক, লাটিন, ইঙ্গরেজী, ফরাসি, এই নয় ভাষায় ব্যুৎপন্ন ও বিলক্ষণ বুদ্ধিশক্তিসম্পন্ন ছিলেন,