পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/২৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বর্ণপরিচয়—প্রথম ভাগ ২৭৩ কিছু খাবার দেন, গোপাল তাই খায় ; খাইয়া, আপনার ছোট ভাই ভগিনীগুলি লইয়া, খানিক খেলা করে । গোপাল কখনও লেখা পড়ায় অবহেলা করে না । সে পাঠশালায় যাহা পড়িয়া আইসে, বাড়ীতে তাহ ভাল করিয়া পড়ে ; পুরাণ পড়াগুলি দুবেল। আগাগোড়া দেখে । পড়া বলিবার সময়, সে সকলের চেয়ে ভাল বলিতে পারে। গোপালকে যে দেখে, সেই ভালবাসে। সকল বালকেরই গোপালের মত হওয়া উচিত । ২০ পাঠ গোপাল যেমন সুবোধ, রাখাল তেমন নয়। সে বাপ মার কথা শুনে না ; যা খুসী তাই করে ; সারা দিন উৎপাত করে ; ছোট ভাই ভগিনী গুলির সহিত ঝগড়া ও মার:মারি করে । এ কারণে, তার পিতা মাতা তাকে দেখিতে পারেন না । রাখাল, পড়িতে যাইবার সময়, পথে খেলা করে ; মিছামিছি দেরি করিয়া, সকলের শেষে পাঠশালায় যায়। আর আর বালকের পাঠশালায় গিয়া পড়িতে বসে। রাখালও দেখাদেখি বই খুলিয়া বসে ; বই খুলিয়া হাতে করিয়া থাকে, এক বারও পড়ে না। লেখা পড়ায় রাখালের বড় অমনোযোগ । সে এক দিনও মন দিয়া পড়ে না ; এবং এক দিনও ভাল পড়া বলিতে পারে না । গুরু মহাশয় যখন নূতন পড়া দেন, সে তাহাতে মন দেয় না, কেবল এদিকে ওদিকে চাহিয়া থাকে। খেলিবার ছুটী হইলে, রাখাল বড় খুসী। খেলিতে পাইলে, সে আর কিছুই চায় না । খেলিবার সময়, সে সকলের সহিত ঝগড়া ও মারামারি করে ; এ কারণে গুরুমহাশয় তাহাকে সতত গলাগলি দেন । ছুটী হইলে, বাড়ীতে গিয়া, রাখাল পড়িবার বই কোথায় ফেলে, কিছুই ঠিকানা থাকে না । কোনও দিন পাঠশালায় ফেলিয়া আইসে ; কোনও দিন পথে হারাইয়া আইসে। রাখালের পিতা, এক মাসের ভিতর, চারিবার বই কিনিয়া দিয়াছেন। তিনি বলিয়াছেন, এবার বই হারাইলে, আর কিনিয়া দিবেন না । রাখালকে কেহ ভাল বাসে না । কোন বালকেরই রাখালের মত হওয়া উচিত নয়। যে রাখালের মত হইবে, সে লেখা পড়া শিখিতে পারিবে না। Ꮼ☾