পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/৩১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

నవల বিদ্যাসাগর-গ্রন্থাবলী—শিক্ষা তাবৎ তাহারা স্থির ও নিশ্চিন্ত হইতে পারেন না । তোমরা সুস্থ হইয়া উঠিলে, র্তাহাদের আহলাদের সীমা থাকে না । অতএব, তোমরা কদাচ পিতা মাতার অবাধ্য হইবে না। র্তাহারা যাহা বলেন, তাহা করিবে ; যাহা নিষেধ করেন, তাহা কখনও করিবে না। যাহাতে র্তাহারা সন্তুষ্ট হন, সৰ্ব্বদা সে চেষ্টা করিবে । যাহাতে র্তাহারা অসন্তুষ্ট হন, কদাচ তাহা করিবে না। যাহার এইরূপে চলে, তাহাদিগকে সু সস্তান বলে । সু সন্তান হইলে, পিতা মাতার মুখের ও আহলাদের সীমা থাকে না । নবম পাঠ স্বরেন্দ্র সুরেন্দ্র । আমার কাছে এস। তোমায় কিছু জিজ্ঞাসা করিব । এই কথা শুনিয়া, সুরেন্দ্র তৎক্ষণাৎ শিক্ষকের নিকট উপস্থিত হইল। তিনি বলিলেন, আমি শুনিলাম, তুমি, পুষ্করিণীর পাড়ে দাড়াইয়া, ডেলা ছুড়িতেছিলে ; ইহাতে আমি অতিশয় দুঃখিত ও অসন্তুষ্ট হইয়াছি । এক্ষণে তোমায় জিজ্ঞাসা করি, ঐ কথা যথার্থ কি না । সুরেন্দ্র বলিল, হা মহাশয় । যাহা শুনিয়াছেন, তাহা সত্য ; আমি ডেলা ছুড়িতেছিলাম। ডেলা ছুড়িলে কোনও দোষ হয়, আমি তাহা মনে করি নাই । গাছের ডালে একটী পাখী বসিয়াছিল তাহাকে মারিবার জন্য, ডেলা ছুড়িয়াছিলাম । এই কথা শুনিয়া শিক্ষক কহিলেন, সুরেন্দ্র । তুমি অতি অন্যায় কৰ্ম্ম করিয়াছ । পাখী তোমার কোনও ক্ষতি করে নাই ; কি জন্যে তাহাকে ডেলা মারিতে গেলে । যদি তাহার গায়ে ডেলা লাগিয়া থাকে, সে কত কষ্ট পাইয়াছে। যদি আর কেহ ডেলা ছুড়ে, আর ঐ ডেলা তোমার গায়ে লাগে, তোমার কত কষ্ট হয় । তোমায় বারণ করিতেছি, তুমি পাখী বা আর কোনও জন্তুকে কখনও ডেলা মারিও না । সুরেন্দ্র শুনিয়া অতিশয় লজ্জিত হইল এবং কহিল, মহাশয় । আমি আর কখনও কোনও জন্তুকে ডেলা মারিব না । অনেক বালক ঐরূপ করে, তাহ দেখিয়া, আমিও ঐরূপ করিয়াছিলাম, এখন বুঝিতে পারিলাম, ডেলা ছোড়া ভাল নয়।