পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/৪০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উইলিয়ম হটন ইংলণ্ডের অন্তঃপাতী ডর্বি নগরে, হটনের জন্ম হয়। হটনের পিতা অতি দুঃখী ছিলেন। তিনি, পসমপরিষ্করণ করিয়া, জীবিকানিৰ্বাহ করিতেন ; সুতরাং, অতি কষ্টে, বৃহৎ পরিবারের ভরণ পোষণ সম্পন্ন হইত। কোনও কোনও দিন, এরূপ ঘটিত যে, হটনের জননীকে, ছোট ছোট ছেলেগুলির সহিত, সমস্ত দিন উপবাসী থাকিতে হইত ; ছেলেগুলি, ক্ষুধায় কাতর ও আহারের নিমিত্ত লালায়িত হইয়া, জননীকে অতিশয় ব্যাকুল করিত। সায়ংকালে, কিছু আহারের সামগ্ৰী উপস্থিত হইলে, তাহার, ক্ষুধার জ্বালায়, কাড়াকড়ি করিয়া, জননীর ভাগ পৰ্য্যন্ত খাইয়া ফেলিত ; জননী, সজল নয়নে, হাত তুলিয়া বসিয়া থাকিতেন। সুতরাং, র্তাহাকে, অনেক দিন, অনাহারেই থাকিতে হইত। হটনের পিতা যে উপার্জন করিতেন, তাহাতে, তাহার স্ত্রী ও পুত্র কন্যাদিগের ভরণপোষণ সম্পন্ন হইত না। আবার দুর্ভাগ্য ক্রমে, তিনি মুরাপানে আসক্ত হইয়৷ উঠিলেন। সৰ্ব্বদা শুড়ির দোকানে পড়িয়া থাকিতেন ; যে উপার্জন করিতেন, তাহার অধিকাংশই সুরাপানে ব্যয়িত হইত ; সুতরাং, র্তাহার স্ত্রী ও পুত্র কন্যাগণের আহারের ক্লেশ আরও অধিক হইয়া উঠিল। হটন কহিয়াছেন, আমি, এক দিন, দিবারাত্রি, উপবাসী ছিলাম ; পর দিন, বেলা দুই প্রহরের সময়, ময়দা ও জল ফুটাইয়া, কিঞ্চিৎ মাত্র আহার করিয়াছিলাম । এরূপ দুরবস্থায় যেরূপ লেখা পড়া হইতে পারে, তাহ অনায়াসে বুঝিতে পারা যায়। যাহা হউক, হটনের পিতা হটনকে, তাহার পাঁচ বৎসর বয়সের সময়, এক পাঠশালায় পঠাইয়া দেন। ঐ পাঠশালার শিক্ষক আপন ছাত্রদিগকে, লেখা পড়া যত শিখাইতে পারুন না পারুন, বিলক্ষণ প্রহার করিতে পারিতেন । হটন কহিয়াছেন, আমার শিক্ষক লেখা পড়া কিছুই শিখাইতেন না, সৰ্ব্বদা কেবল, চুল ধরিয়া, দিয়ালে মাথ৷ ঠুকিয়া দিতেন। তিনি, দুই বৎসর, এই পাঠশালায় ছিলেন ; পরে, তাহার পিতা তাহাকে, সাত বৎসর বয়সের সময়, পাঠশালা ছাড়াইয়া, এক রেশমের বানকে নিযুক্ত করিয়া দিলেন । এই স্থানে, হটনের ক্লেশের সীমা ছিল না। তিনি কহিয়াছেন, এই সময়ে, আমাকে, প্রতিদিন, অতি প্রত্যুষে উঠিতে হইত ; বিশেষ ক্রটি হউক না হউক, মধ্যে মধ্যে, প্রভুর বেত্রপ্রহার সহ করিতে হইত ; আর, যত ছোট লোকের ছেলের সহিত