পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/৪৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আখ্যানমঞ্জরী—দ্বিতীয় ভাগ 86 & আমি যাবজ্জীবন, প্রাণপণে পরিশ্রম ও আহার প্রভৃতি সৰ্ব্ববিষয়ে সাতিশয় ক্লেশস্বীকার করিয়া, প্রচুর অর্থসঞ্চয় করিয়াছি। এক্ষণে, এই বিনিয়োগপত্র দ্বারা, আমার সঞ্চিত সমস্ত অর্থ পূৰ্ব্বোক্ত জলকষ্টনিবারণের নিমিত্ত, প্রদত্ত হইতেছে। যাহাদের উপর এই বিনিয়োগপত্রের অনুযায়ী কাৰ্য্যনিৰ্ব্বাহের ভার অর্পিত হইল, র্তাহাদের নিকট আমার সবিনয় প্রার্থন এই, অবিলম্বে এক উত্তম জলপ্রণালী প্রস্তুত করাইয়া দিবেন। বিবেচনা করিয়া দেখিলে, গয়ট, সৰ্ব্বাংশে, অতি প্রশংসনীয় ব্যক্তি। র্তাহার স্যায়, প্রকৃত পরদুঃখকাতর ও যথার্থ পরোপকারী মনুষ, সচরাচর, নয়নগোচর হয় না। সকলে তদীয় দৃষ্টাস্তের অনুবত্তী হইয়া চলিলে, সংসারে ক্লেশের লেশমাত্র থাকে না। মাতৃভক্তির পুরস্কার যুরোপের রাজাদের ও প্রধান লোকদিগের প্রথা এই, তাহারা যে গৃহে অবস্থিতি করেন, সেই গৃহের বহির্ভাগে অল্পবয়স্ক ভূত্যের উপবিষ্ট থাকে। আবশ্ব্যক হইলে, তাহার। ঘণ্টা বাজান ; ঘণ্টার শব্দ শুনিয়া, ভূত্যেরা তাহাদের নিকট উপস্থিত হয়। এক দিন, প্রশিয়ার অধীশ্বর ফ্রেডরিক ঘণ্টা বাজাইলেন ; কিন্তু কোনও ভৃত্য উপস্থিত হইল না। তখন তিনি গৃহ হইতে বহির্গত হইলেন, এবং একমাত্র বালকতৃত্যকে নিদ্রিত দেখিয়া, তাহাকে জাগরিত করিবার নিমিত্ত, নিকটে গিয়া, তাহার জামার বগলিতে একখানি পত্র দেখিতে পাইলেন। কৌতুহলাক্রান্ত হইয়া, তিনি ঐ পত্ৰখানি হস্তে লইলেন। পত্ৰখানি বালকের জননীর লিখিত । বালক, বেতন পাইয়া, জননীর ব্যয়নির্বাহের নিমিত্ত টাকা পাঠাইয়া দিয়াছিল। তিনি, টাকা পাইয়া পুত্রকে লিখিয়াছেন, বৎস, তুমি যাহা পাঠাইয়াছ, তাহ পাইয়া আমি অতিশয় আহলাদিত হইয়াছি। তুমি যথার্থ মাতৃভক্ত ; আশীৰ্ব্বাদ করিতেছি, জগদীশ্বর তোমার মঙ্গল করুন। পত্র পড়িয়া, ফ্রেডরিক অতিশয় আহলাদিত হইলেন ; মাতৃভক্ত বালকের প্রশংসা করিতে করিতে, নিজ গৃহে প্রতিগমন পুৰ্ব্বক, একটা টাকার থলি বহিষ্কৃত করিলেন এবং সেই পত্ৰখানি ও ঐ টাকার থলিটি বালকের বগলিতে রাখিয়া, নিজ গৃহে প্রবেশ করিয়া, ঘণ্টা বাজাইতে লাগিলেন। বালকের নিদ্রা ভঙ্গ হইল। তখনও ঘণ্টাধ্বনি হইতেছিল ; তাহা শুনিয়া, সে তৎক্ষণাৎ রাজসমীপে উপস্থিত হইল। রাজা বলিলেন, তোমার বিলক্ষণ