পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/৬১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নীতিবোধ— প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব ( My፭) নিৰ্ব্বাহ করিতে পারে, সে সৰ্ব্ব লোকের প্রিয় ও আদরণীয় হয়। ইহা অত্যন্ত লজ্জার বিষয় যে, আর সকলেই পরিশ্রম করিবেক, কেবল আমি সকলের ন্যায় বুদ্ধিসম্পন্ন ও হস্তপদাদিবিশিষ্ট হইয়াও, অলস হইয়া বসিয়া থাকিব ; এবং অল্প পরিশ্রমে যাহা লাভ করিতে পারা যায় এমন বিষয়ের নিমিত্তেও অন্তের মুখ চাহিয়া থাকিব। আমরা আপন কৰ্ম্ম স্বহস্তে করিলে যত উত্তম রূপে সম্পন্ন হইবেক, অন্যের উপর ভারাপণ করিয়া নিশ্চিন্ত থাকিলে সেরূপ হওয়া সম্ভাবিত নহে ; হয় ত সম্পন্নই হইবেক না । অতএব আমরা স্বয়ং যে কৰ্ম্ম নিম্পন্ন করিতে পারি, অন্যের উপর সে বিষয়ের ভার সমর্পণ করা কদাচ উচিত নহে। প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব ইচ্ছা করিয়া আপদে পড়িতে যাওয়া অতি নিৰ্ব্বোধের কৰ্ম্ম। কিন্তু আপদ পড়িলে সাহস ও ধৈর্য্য অবলম্বন করিয়া অনাকুলিত চিত্তে তাহার প্রতিবিধান চেষ্টা করা উচিত। আমরা যত ইচ্ছ। সাবধান হই না কেন, জন্মাবচ্ছিন্নে যে কখন কোন আপদে পড়িব না এমন আশা করিতে পারা যায় না। আমাদের পরিধান বস্ত্রে ও বাসগৃহে আগুন লাগিতে পারে, এবং ঘটনাক্রমে আমাদের জলমগ্ন হওয়াও অসম্ভাবিত নহে। এই সকল অবস্থা ঘটিলে আমাদের শরীরে অত্যন্ত আঘাত লাগিতে পারে ; আর তেমন তেমন হইলে প্রাণনাশেরও আটক নাই। কিন্তু বিপদ পড়িলে যদি আমরা বিবেচনা পূৰ্ব্বক স্থির চিত্তে আত্মরক্ষার উপায়চিন্তনে তৎপর হই, তাহা হইলে তাদৃশ অনিষ্ট ঘটিবার আশঙ্কা থাকে না। বিপদ পড়িলে কতকগুলি লোক ভয়ে এমন অভিভূত ও হতবুদ্ধি হইয়া যায় যে, তাহারা আত্মরক্ষার কিছু মাত্র উপায় করিতে পারে না। এইরূপ হইলে বিপদের নিবারণ না হইয়া বরং বৃদ্ধিই হইতে থাকে। বিপৎকালে কাতর না হওয়া অত্যন্ত আবশ্ব্যক । সেই সময়ে স্থির ও সতর্ক থাকা উচিত ; তাহা হইলে উপস্থিত অমঙ্গল অতিক্রম করিবার যদি কোন উপায় থাকে তাহা উদ্ভাবন ও অবলম্বন করিতে পারা যায়। ইহাকেই প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব কহে । এই গুণ সৰ্ব্বদা সৰ্ব্বপ্রশংসনীয়। যদি কখন কাহারও কাপড়ে আগুন ধরে, তাহ হইলে অন্তের সাহায্যার্থে দৌড়িয়া বেড়ান উচিত নহে। দাড়াইয়া থাকিলে অথবা দৌড়িয়া যাইলে বস্ত্র অতি শীঘ্ৰ দগ্ধ হয় ও ত্বরায় দেহ দাহ করে। ঐ সময়ে ভূতলে পড়িয়া গড়াগড়ি দেওয়া উচিত ; এরূপ করিলে