পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/৬৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যৎকালে আমি ও মদনমোহন তর্কালঙ্কার সংস্কৃত কলেজে নিযুক্ত ছিলাম ; তর্কালঙ্কারের উদ্যোগে, সংস্কৃতযন্ত্র নামে একটি ছাপাখানা সংস্থাপিত হয়। ঐ ছাপাখানায়, তিনি ও আমি, উভয়ে সমাংশভাগী ছিলাম। কতিপয় বৎসর পরে, তর্কালঙ্কার, মুরসিদাবাদে জজ পণ্ডিতের পদে নিযুক্ত হইয়া, কলিকাতা হইতে প্রস্থান করেন । কিছু দিন পরে, তিনি ডেপুটি মাজিষ্ট্রেটের পদে নিযুক্ত হয়েন । ক্রমে ক্রমে, এরূপ কতকগুলি কারণ উপস্থিত হইল যে, তর্কালঙ্কারের সহিত কোনও বিষয়ে সংস্রব রাখা উচিত নহে। এজন্য, উভয়ের আত্মীয় পটেলডাঙ্গানিবাসী বাবু শু্যামাচরণ দে দ্বারা, তর্কালঙ্কারের নিকট এই প্রস্তাব করিয়া পাঠাই, হয় তিনি, আমার প্রাপ্য আমায় দিয়া, ছাপাখানায় সম্পূর্ণ স্বত্ববান হউন, নয় তাহার প্রাপ্য বুঝিয়া লইয়া, ছাপাখানার সম্পর্ক ছাড়িয়া দিউন, অথবা উভয়ে ছাপাখানার যথাযোগ্য বিভাগ করিয়া লওয়া যাউক । তদনুসারে তিনি, আপন প্রাপ্য লইয়া, ছাপাখানার সম্পর্কত্যাগ স্থির করেন। অনন্তর, উভয়ের সম্মতিক্রমে, বাবু শ্যামাচরণ দে, পণ্ডিত তারানাথ তর্কবাচস্পতি, শ্ৰীযুত বাবু রাজকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়, এই তিন ব্যক্তি, হিসাব নিকাস ও দেন পাওনা স্থির করিয়া দিবার নিমিত্ত, সালিস নিযুক্ত হয়েন, এবং খাত পত্র দেখিয়া, হিসাব নিকাস ও দেনা পাওনার মীমাংসা করিয়া দেন । র্তাহীদের মীমাংসাপত্রের প্রতিলিপি তর্কালঙ্কারের নিকট প্রেরিত হইলে, তিনি পত্রদ্বারা শু্যামাচরণ বাবুকে জানান, আমি এক্ষণে যাইতে পারিব না ; আদালত বন্ধ হইলে, কলিকাতায় গিয়া, আপন প্রাপ্য বুঝিয়া লইব । কিছু দিন পরে তাহার মৃত্যু হওয়াতে, র্তাহার পত্নী, কলিকাতায় আসিয়া, ছাপাখানা সংক্রান্ত স্বীয় পতির প্রাপ্য বুঝিয়া লয়েন। কলিকাতায়, মুরসিদাবাদে, ও কাদিতে কৰ্ম্ম করিবার সময়, তর্কালঙ্কারের পরিবার র্তাহার নিকটে থাকিতেন ; তাহার বৃদ্ধ জননী বিল্বগ্রামের বাটতে অবস্থিতি করিতেন । তর্কালঙ্কারের মৃত্যুর পর, তাহার পরিবার বিশ্বগ্রামের বাটতে অবস্থিতি করিতে লাগিলেন । কিছু দিন পরে, তর্কালঙ্কারের মাতাঠাকুরাণী কলিকাতায় আগমন করিলেন, এবং নিরতিশয় শোকাভিভূত হইয়া, বিলাপ ও অশ্রুবিসর্জন করিতে লাগিলেন। তাহার দুইটি পুত্র হইয়াছিল। কনিষ্ঠটি, কিছু কাল পূৰ্ব্বে, কালগ্রাসে পতিত হয়েন। জ্যেষ্ঠ তর্কালঙ্কার