পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাঙ্গালার ইতিহাস—দ্বিতীয় ভাগ Q> শূন্ত হওয়াতে, তাহারা তাহাকে, সৰ্ব্বাপেক্ষ উপযুক্ত বিবেচনা করিয়া, ঐ পদে অভিষিক্ত করিলেন। তৎকালে, র্তাহার চল্লিশ বৎসর বয়ঃক্রম হইয়াছিল। দেশীয় লোকেরা যে রাজস্ব সংক্রান্ত সমুদায় বন্দোবস্ত করেন, ইহাতে ডিরেক্টরের অতিশয় বিরক্ত ছিলেন। র্তাহারা দেখিলেন, আয় ক্রমে অল্প হইতেছে। অতএব, দেওয়ানী প্রাপ্তির সাত বৎসর পরে, তাহার। যথার্থ দেওয়ান হওয়া, অর্থাৎ রাজস্বের বন্দোবস্তের ভার আপনাদের হস্তে লষ্টয়া যুরোপীয় কৰ্ম্মচারী দ্বারা কাৰ্য্যনিৰ্ব্বাহ করা, মনস্থ করিলেন। এই নূতন নিয়ম হেষ্টিংস সাহেবকে আসিয়াই প্রচলিত করিতে হইল। তিনি ১৩ই এপ্রিল, গবর্ণরের পদ গ্রহণ করিলেন । ১৪ই মে, কোন্সিলের সম্মতি ক্রমে, এই ঘোষণা প্রচারিত হইল যে, ইঙ্গরেজের স্বয়ং রাজস্বের কার্য্যনির্বাহ করিবেন ; যে সকল যুরোপীয় কৰ্ম্মচারীর রাজস্বের কৰ্ম্ম করিবেন, তাহাদের নাম কালেক্টর হইবেক ; কিছু কালের নিমিত্ত, সমুদয় জমী ইজারা দেওয়া যাইবেক ; আর, কোন্সিলের চারি জন মেম্বর, প্রত্যেক প্রদেশে গিয়া, সমস্ত বন্দোবস্ত করিবেন । ইহারা, প্রথমে কৃষ্ণনগরে গিয়া, কাৰ্য্যারম্ভ করিলেন । পূৰ্ব্বাধিকারীরা, অত্যন্ত কম নিরিখে, মালগুজারী দিতে চাহিবাতে, তাহার। সমুদয় জমা নীলাম করাইতে লাগিলেন। যে জমীদার অথবা তালুকদার হায্য মালগুজারী দিতে সম্মত হইলেন, তিনি আপন বিষয় পূৰ্ব্ববৎ অধিকার করিতে লাগিলেন ; আর, যিনি অত্যন্ত কম দিতে চাহিলেন, তাহাকে পেনশন দিয়া, অধিকারচু্যত করিয়া, তৎপরিবর্তে অন্ত ব্যক্তিকে অধিকার দেওয়াইলেন। গবর্ণর স্বচক্ষে সমুদয় দেখিতে পরিবেন, এই অভিপ্রায়ে, মালের কাছারী মুরশিদাবাদ হইতে কলিকাতায় আনীত হইল। এই রূপে রাজন্ধুকৰ্ম্মের নিয়ম পরিবর্তিত হওয়াতে, দেশের দেওয়ানী ও ফৌজদারী কৰ্ম্মেরও নিয়মপরিবর্ত আবশ্যক হইল। প্রত্যেক প্রদেশে, এক ফৌজদারী ও এক দেওয়ানী, দুই বিচারালয় সংস্থাপিত হইল। ফৌজদারী আদালতে কালেক্টর সাহেব, কাজী, মুফতি, এই কয় জন একত্র হইয়া বিচার করিতেন। আর, দেওয়ানী আদালতেও, কালেক্টর সাহেব মোকদ্দমা করিতেন, দেওয়ান ও অন্যান্ত আমলার। র্তাহার সহকারিতা করিত। মোকদ্দমার আপীল শুনিবার নিমিত্ত, কলিকাতায় দুই বিচারালয় স্থাপিত হইল । তন্মধ্যে, যে স্থলে দেওয়ানী বিষয়ের বিচার হইত, তাহার নাম সদর দেওয়ানী আদালত, আর যে স্থানে ফৌজদারী বিষয়ের, তাহার নাম নিজামৎ আদালত, রহিল । এ পর্য্যন্ত, আদালতে যত টাকার মোকদম উপস্থিত হইত, প্রাড় বিবাক তাহার চতুর্থ অংশ পাইতেন, এক্ষণে তাহ রহিত হইল ; অধিক জরিমান রহিত হইয়া গেল ;