বাঙ্গালার ইতিহাস—দ্বিতীয় ভাগ إهما পরোয়ানা বাহির হইল। সরিফ সাহেব, ঐ ব্যাপারের সমাধা করিবার নিমিত্ত, এক জন সারজন ও ষাটি জন অস্ত্রধারী পুরুষ পাঠাইয়া দিলেন । রাজ গবর্ণমেণ্টে আবেদন করিলেন, সুপ্রীম কোর্টের লোকের আসিয়া আমার লোক জনকে প্রহার ও আঘাত করিয়াছে, বাড়ী ভাঙ্গিয়াছে, অন্তঃপুরে প্রবেশ করিয়াছে, জিনিস পত্র লুঠ করিয়াছে, দেবালয় অপবিত্র করিয়াছে, দেবতার অঙ্গ হইতে আভরণ খুলিয়া লইয়াছে, খাজান আদায় বন্ধ করিয়াছে, এবং রাইয়তদিগকে খাজান দিতে মান করিয়াছে। গবর্ণর জেনেরল বাহাদুর কোন্সিলের বৈঠকে এই নিৰ্দ্ধাৰ্য্য করিলেন, অতঃপর সতর্ক হওয়া উচিত ; এমন সকল বিষয়েও ক্ষান্ত থাকিলে, রাজশাসনের এক কালে লোপাপত্তি হয় ; অনন্তর, রাজাকে সুপ্রীম কোটের আজ্ঞাপ্রতিপালন করিতে নিষেধ করিয়া, তিনি মেদিনীপুরের সেনাপতিকে এই আজ্ঞাপত্র লিখিলেন, তুমি সরিফের লোক সকল আটক করিবে । এই আজ্ঞা পহুছিতে অধিক বিলম্ব হওয়ায়, তাহাদের দৌরাত্ম্য ও রাজার বাটলুঠের নিবারণ হইতে পারিল না ; কিন্তু ফিরিয়া আসিবার কালে সকলে কয়েদ হইল । সেই সময়ে গবর্ণর জেনেরল এরূপ আদেশও করিলেন যে, যে সমুদয় জমীদার, তালুকদার, ও চৌধুরী ব্রিটিস সব জেক্ট অথবা বিশেষ নিয়মে আবদ্ধ নহেন, তাহারা যেন সুপ্রীম কোর্টের অজ্ঞাপ্রতিপালন না করেন ; আর, প্রদেশীয় সেনাধ্যক্ষদিগকে নিষেধ করিলেন, আপনারা সৈন্য দ্বারা সুপ্রীম কোর্টের সাহায্য করিবেন না । সারজন ও র্তাহাদের সঙ্গী লোকদিগের কয়েদ হইবার সংবাদ স্থপ্রীম কোটে পহুছিব মাত্র, জজেরা, তুতিশয় ক্রুদ্ধ হইয়া, প্রথমতঃ কোম্পানির উকীলকে, তুমি সংবাদ দিয়াছ, তাহাতেই আমাদের লোক সকল কয়েদ হইল, এই বলিয়া জেলখানায় পুরিয়া চাবি দিয়া রাখিলেন । পরিশেষে, গবর্ণর জেনেরল ও কোন্সিলের মেস্বরদিগের নামেও এই বলিয়া সমন করিলেন যে, আপনারা কাশীনাথ বাবুর মোকদম উপলক্ষে, সুপ্রীম কোর্টের লোকদিগকে রুদ্ধ করিয়া, কোর্টের হুকুম অমান্ত করিয়াছেন। কিন্তু হেষ্টিংস সাহেব স্পষ্ট উত্তর দিলেন, আমরা, আপন পদের ক্ষমতা অনুসারে, যে কৰ্ম্ম করিয়াছি, সে বিষয়ে সুপ্রীম কোর্টের হুকুম মান্য করিব না। এই ব্যাপার ১৭৮০ সালের মার্চ মাসে ঘটে । এই সময়ে কলিকাতাবাসী সমুদয় ইঙ্গরেজ ও স্বয়ং গবর্ণর জেনেরল বাহাদুর, সুপ্রীম কোর্টের অত্যাচার হইতে পরিত্রাণ পাইবার প্রার্থনায়, পার্লিমেণ্টে এক আবেদনপত্র
পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/৮৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।