পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (সাহিত্য).pdf/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৷৶৹

পুস্তক ও প্রস্তাব লিখিয়াছেন, কিন্তু বাঙ্গাল। ছন্দের মূল প্রাণবগ্তটী এতকাল প্রায় অনাবিষ্কৃতই ছিল। অতি সম্প্রতি কয়েক জন প্রতিভাবান্‌ কৰি ও গব্ষেকের সার্থক চেষ্টায় বাঙ্গাল। ছন্দের সেই প্রাণবস্তুটী ধর! পড়িয়াছে। বাঙ্কালা গদ্য- সার্থক বাঙ্গালা গদ্য__. অনেকে লিখিয়াছেন, এবং আজও অনেকে লিখিতেছেন ; বাঙ্গালা গদ্যের অন্তর্নিহিত

.বঙ্কার সম্বন্ধে সচেতন হওয়া এখনকার দিনে অসম্ভব নয়। কিন্তু যখন ভাল গদ্যের নমুন।

কদাচিৎ দেখ! যাইত, সেই কালে বিদ্যাসাগর যে কি. অনন্যসাধারণ প্রতিভাবলে ব্রাঙ্গীলা গদ্যের সেই অগ্তনিহিত বঙ্কারের সম্ভাবনা বা অস্তিত্ব আবিষ্কার করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন, তাহ। ভাবিলে বিস্ময়াবিষ্ট হইতে হয়।

সকল ভাষায় গদ্যের ছন্দ সাধারণতঃ মৌখিক ভাষার ছন্দকেই আশ্রয় করিয়া থীকে | ইংরেজী গদ্যের ছন্দ এবং বাঙ্গালা গদ্যের ছন্দ সম্পূর্ণ পৃথক্‌, এবং এই পার্থক্য, ছুইটা ভাষার 8১:89 বা ম্বরাঘাতকে অবলম্বন করিয়া। ইংরেজী ভাষায় প্রত্যেক মূল শব্দের নিজন্থ স্বরাঘাত আছে, এবং বাক্যে প্রত্যেক মৌলিক শব্দ, স্বকীয় স্বরাঘাত সমেত নিজ স্বাতন্ত্য বজায় রাখে। বাঙ্গালায় তাহা হয় না। শব্াদি একক উচ্চারিত হইলে স্বরাঘাত-সমেত উচ্চারিত হয়, কিন্তু যে মূহুর্তে ভাহা বাক্যে ব্যবহৃত হয়, সেই মুহ্তে শবটার বিশিষ্ট স্বরাঘাত বাক্যের ছন্দোগতির অধীন হইয়া পড়ে । স্বরাঘাতের দিক্‌ দিয়া বিচার করিলে, ইংরেজীতে একটা ক্ষুদ্র বা বৃহৎ বাক্য কতকগুলি বিচ্ছিন্ন, প্রবল স্বরাধাতযুক্ত, স্বাধীন-ৃত্ শব্দের সমগ্রি; কিন্তু বাঙ্গালায় একটী বাক্য কতকগুলি বাক্যাংশের সমষ্টি মাত্র। এই সকল বাক্যাংশকে 70988. 1০৮) অর্থাৎ শ্বাস-পর্ধ অথবা 88086 ৪০৮1) অর্থাৎ 'দার্থপর্ব নামে অভিহিত করা যাইতে পারে । প্রাত্যেক শ্বাস-পর্ধ বা সার্থ-পর্ব, বাক্যের পৃথক্‌ অঙ্গরূপে, সাধারণতঃ আদাক্ষারে শ্বরাঘাতযুক্ত হয়_-পর্বস্থিত অন্য শব্দের স্বরাঘাত বিলুপ্ত হয়। বাঙ্গাল গদ্যের এই প্রকৃতি বিদ্যাসাগর মহাশয় তাহার অনস্যসাধারণ ভাষাবিষয়ক ধ্বনি ও ছন্দ-বিচারশক্তির দ্বারা বুঝিতে পারিয়াছিলেন, এবং এ সম্বন্ধে তিনি উত্তরোত্তর অধিক চেতন হইয়াছিলেন। অর্থাৎ গদ্য রচনার ছন্দ বিষয়ে তিনিই ছিলেন প্রথম ড্রষ্টা ও অঙ্টা ; গদ্যপাঠের ধ্বনিসামন্রাস্তে যে পাঠক ও শ্রোতা আনন্দ পাইতে পারে, এই স্মক্ অনুভূতি তাহার ছিল। কমা, সেমিকোলন, ও ড্যাশের ব্যবহার, বাঙ্গাল। গদ্যের বাক্যাংশ স্বাস- ও সার্থ-পর্ব অন্ুদারেই তিনি প্রকাশ করিয়া গিয়াছেন। আজ হইতে ৭০1৮০ বৎসর পূর্বে বাঙ্গালা ভাষার প্রকৃতি সম্বন্ধে যখন কেহ চিন্তা করিবার ক্ষমতা পর্যস্ত অর্জন করে নাই, দেই তমসাচ্ছন্ন যুগে এ বিষয়ে তাহার সার্থক চিন্তা_-বাঙ্গালা ভাষার