মাইকেল মৃত্যুমুখে নিপতিত হন। অগ্রজ মহাশয়, কোন আত্মীয়ের নিকট উপরি উক্ত আট হাজার টাকা যাহা ঋণ করিয়া দিয়াছিলেন, সুদসহ উক্ত আত্মীয়াকে সমস্ত টাকা তাঁহাকেই পরিশোধ করিতে হইল। তজ্জন্যই বাবু কালীচরণ ঘোষ ও বাবু রাজকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সংস্কৃত-যন্ত্র বিক্রয় করেন। পরের হিতকামনায় অগ্রজ ব্যতীত কেহ কি এরূপ ঋণ করিয়া, নিজের জীবিকানির্ব্বাহের সম্পত্তি বিক্রয় করিতে পারেন?
ঐ সময় গঙ্গাদাসপুরনিবাসী তারাচাঁদ সরকার, রাধানগরীনিবাসী বাবু রামকমল মিশ্র ও গঙ্গাদাসপুরনিবাসী বাবু গোরাচাঁদ দত্তের নামে কলিকাতাস্থ আদালতে অভিযোগ করিয়া, ৫০০৲ টাকা আদায় করেন। যে সময়ে উহাদিগকে ওয়ারেণ্ট দ্বারা গ্রেপ্তার করিয়া লইয়া যায়, সেই সময়ে উহারা নিরুপায় হইয়া, পিয়াদাসহ পটলডাঙ্গাস্থ বাবু শ্যামাচরণ বিশ্বাসের ভবনে অগ্রজের সহিত সাক্ষাৎ করিয়া, তাঁহাকে ঐ দায় হইতে মুক্ত করিয়া দিবার জন্য অনুরোধ করেন। নিজের টাকা না থাকা প্রযুক্ত অগ্রজ মহাশয়, তৎক্ষণাৎ তথায় উপবিষ্ট বাবু রাখালমিত্রের নিকট খত লেখাইয়া ও স্বয়ং সাক্ষী হইয়া ৫০০৲ টাকা উক্ত ব্যক্তিদ্বয়কে দেওয়াইয়া, তাহাদিগকে ঋণদায় হইতে মুক্ত করেন। পরে ইহারা ঐ টাকা পরিশোধ না করাতে, রাখালবাবুর মৃত্যুর অব্যবহিত পূর্ব্বে অগ্রজ, সুদসহ ৮০০৲ টাকা তাঁহার পত্নীকে পরিশোধ দিয়া, ঐ খাত খালাস করেন। দাদা, খতে কেবল সাক্ষীমাত্র ছিলেন; উত্তমর্ণ দাদার খাতিরে টাকা দিয়াছিলেন বলিয়াই তাঁহার নিকট চাহিয়াছিলেন। উক্ত অধমর্ণদ্ধয় আর কখন তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ করেন নাই। শুনিয়াছি, তাঁহাদের উভয়েরই মৃত্যু হইয়াছে এবং উভয়েরই বিলক্ষণ ভূমিসম্পত্তি আছে।
এক সময়ে পণ্ডিত জগন্মোহন তর্কালঙ্কার বিপদে পড়িয়া, বিষণ্ণ-বদনে দাদার নিকট আসিয়া বলেন, “মহাশয়, অত্যন্ত বিপদে পড়িয়াছি, পরিত্রাণের উপায়ান্তর নাই, যদি অনুগ্রহ করিয়া ৫০০৲ টাকা ধার দেন, তাহা হইলে এ