পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বাধীনাবস্থা।
১৮৫

বৎসর প্রায় দুই শত টাকার ঔষধ ও পুস্তক লইয়া বিতরণ করিতেন। অনেক আত্মীয় ব্যক্তি, যাহারা য়্যালোপ্যাথির গোঁড়া ছিল এবং যাহাদের হোমিওপ্যাথিতে আস্থা ছিল না, হোমিওপ্যাথির উৎকর্ষ জানাইবার জন্য, তিনি বেঙ্গল হোমিওপ্যাথি ডিস্পেনসারির স্বামী, তাঁহার আত্মীয়, বাবু লালবিহারী মিত্র মহাশয়ের নিকট হইতে উক্ত চিকিৎসা শিক্ষা ও পরীক্ষা করিতে দিতেন। তাঁহার এত সহগুণ ছিল যে, এক দিবস উক্ত লালবিহারীবাবুর ডিস্পেনসারিতে আলমারি খুলিয়া পুস্তক দেখিবার সময়ে, তিনি অত্যন্ত ব্যগ্র হইয়াছিলেন এবং উক্ত আলমারি হইতে একটি লৌহের কর্ক প্রেসার তাঁহার পায়ের বুদ্ধ অঙ্গুলির উপর পতিত হয়; তাহাতে এত গুরুতর আঘাত লাগিয়াছিল যে, তাঁহাকে প্রায় মাসাবধি শয্যাগত থাকিতে হয়, কিন্তু আঘাত লাগিবার সময় পাছে লালবিহারীবাবুর মনে দুঃখ হয়, একারণ তিনি মুখের বিকৃত ভাব প্রকাশ করেন নাই। সহজভাবে পুস্তকাদি দেখিয়া, বাটীতে প্রত্যাগমন করেন। মৃত্যুর পূর্ব্বে এই লালবিহারী বাবুকে শেষ পত্র লিখিয়াছিলেন। হোমিওপ্যাথি পুস্তক বিদ্যাসাগর মহাশয়ের লাইব্রেরীতে যেরূপ দৃষ্ট হয়, এরূপ অপরের পুস্তকালয়ে দৃষ্ট হয় না; পূর্ব্বে বেরিণি কোম্পানি ও অন্যান্য স্থান হইতে হোমিওপ্যাথি পুস্তক লইতেন। যে অবধি লালবিহারী বাবুর সহিত পরিচয় হয়, সেই অবধি অপর স্থানে লাইতেন না।


দুর্ভিক্ষ।

 সন ১২৭২ সালে এ প্রদেশে অনাবৃষ্টিপ্রযুক্ত কিছুমাত্র ধান্যাদি শস্য উৎপন্ন হয় নাই; সুতরাং সাধারণ লোকের দিনপাত হওয়া দুষ্কর হয়। ঐ সালের পৌষ মাসে কোন কোন কৃষক যৎসামান্য ধান্য পাইয়াছিল, তাহাও প্রায় মহাজনগণ আদায় করেন। কৃষকদের বাটীতে কিছুমাত্র ধান্য ছিল না। দুঃসময় দেখিয়া ভদ্রলোকেরা, ইতর লোককে কোনও কাজকর্ম্ম করান নাই;