পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চাকরি।
৬৯

বলিতেন, “অন্যায় দেখিলে কার্য্য পরিত্যাগ করিব।” একারণ, সিবিলিয়ান ছাত্রগণ ও অধ্যক্ষ মার্শেল সাহেব, তাঁহাকে আন্তরিক ভক্তি ও শ্রদ্ধা করিতেন। ঐ বৎসর গবর্ণমেণ্ট, সংস্কৃত-কলেজের দ্বিতীয় এসকলার্শিপের পরীক্ষাগ্রহণের ভার, মার্শেল সাহেবের প্রতি অর্পণ করেন। অগ্রজ মহাশয়, উক্ত সাহেবের জুনিয়ার ও সিনিয়ার উভয় ডিপার্টমেণ্টের প্রশ্ন প্রস্তুত ও মুদ্রিত করিয়া দেন। পরীক্ষাস্থলে প্রশ্ন দেখিয়া, কলেজের শিক্ষক মহাশয়গণ অগ্রজের পাণ্ডিত্য ও কৌশলের ভূরি ভূরি প্রশংসা করিতে লাগিলেন। এই বৎসর মধ্যম সহোদর, সংস্কৃত-কলেজের পরীক্ষায় সিনিয়র ডিপার্টমেণ্টের সর্বপ্রধান হইলেন। মধ্যম দীনবন্ধু, অগ্রজ মহাশয়ের তুল্য বুদ্ধিমান্ ছিলেন। ইতিপূর্ব্বে বাবু রাজকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধায় মহাশয়ের নাম উল্লেখ হইয়াছে, তিনি অগ্রজ মহাশয়ের নিকট ছয় মাসের মধ্যে ব্যাকরণ শেষ করিয়াছিলেন। এক্ষণে তিনি রঘুবংশ, কুমারসম্ভব, মাঘ, ভারবি, মেঘদূত, শকুন্তলা, উত্তরচরিত প্রভৃতি সাহিত্য গ্রন্থ অধ্যয়ন করিয়া অলঙ্কার, সাহিত্যদর্পণ, কাব্যপ্রকাশ অধ্যয়ন করেন; তৎপরে প্রাচীন স্মৃতি, মনু, মিতাক্ষরা অধ্যয়ন করিয়া, সংস্কৃত-কলেজের সিনিয়ার ডিপার্টমেণ্টের ছাত্রগণের সহিত পরীক্ষা দিয়া, সেকেণ্ড গ্রেটের এসকলার্শিপ প্রাপ্ত হন। তৎপরে রাজকৃষ্ণ বাবু পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া, দুই বৎসর কুড়ি টাকা করিয়া ফাষ্টগ্রেটের এসকলার্শিপ প্রাপ্ত হন। আউট ষ্টুডেণ্ট অর্থাৎ বাহিরের কোন বিদ্যার্থী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইলে, এসকলার্শিপ পাইবারও নিয়ম ছিল; তদনুসারে রাজকৃষ্ণ বাবু পরীক্ষা দিয়া বৃত্তি লাভ করেন। ইনি অতিশয় ধীশক্তিসম্পন্ন ছিলেন এবং অনন্যকর্ম্মা ও অনন্যমনা হইয়া নিরন্তর অধ্যয়ন করিতেন। সুতরাং রাজকৃষ্ণ বাবু ছয় মাসে ব্যাকরণ ও দুই বৎসরে সাহিত্য, অলঙ্কার ও স্মৃতি অধ্যয়ন করিয়া, পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া বৃত্তি প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। এই সংবাদ- শ্রবণে সংস্কৃত-কলেজের শিক্ষকগণ ও অপরাপর সকলে বিস্ময়ান্বিত হন। ইহার কারণ এই যে, যিনি সাহিত্যের পণ্ডিত, তিনি স্মৃতি বা অলঙ্কার পড়াইতে অক্ষম; যিনি যে বিষয়ের পণ্ডিত, তিনি তাহাই শিক্ষা দিতে পারিতেন, অপর