পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চাকরি।
৭১

ঐ পদে উপযুক্ত লোক অর্থাৎ ইংরাজী ও সংস্কৃতভাষাভিজ্ঞ পণ্ডিত নিযুক্ত করিবার মানসে, ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের অধ্যক্ষ মার্শেল সাহেবের সমীপে সমুপস্থিত হইয়া বলিলেন, “একটী কার্যদক্ষ লোক নিযুক্ত না করিলে, সংস্কৃত কলেজের বিশেষ উন্নতির আশা নাই। দেখুন, প্রাচীন রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশ ঐ পদে কয়েক বৎসর ছিলেন। তাঁহার মৃত্যুর পর অবধি রামমাণিক্য বিদ্যালঙ্কার ঐ কার্য্য করিয়া আসিতেছিলেন। উল্লিখিত পণ্ডিতদ্বয় দ্বারা কলেজের কোন উন্নতি হইতে দেখি নাই। এক্ষণে আপনার পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে ঐ পদে নিযুক্ত করা সর্ব্বততভাবে কর্ত্তব্য।” মার্শেল সাহেব, অগ্রজ মহাশয়কে সংস্কৃত-কলেজের ঐ পদে নিযুক্ত হইবার কথা ব্যক্ত করিলে পর, তিনি বলিলেন, “ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে প্রবিষ্ট হইবার পূর্ব্বে, আমারও ঐ পদগ্রহণে আন্তরিক ইচ্ছা ছিল। কিন্তু এক্ষণে মহাশয়ের নিকট হইতে কার্য্য পরিত্যাগ করিয়া আমার যাইতে ইচ্ছা নাই।” ইহা শুনিয়া সাহেব, সংস্কৃত-কলেজে নিযুক্ত হইবার জন্য আগ্রহাতিশয় প্রকাশ করাতে বলিলেন, “মহাশয়! যদি আমার মধ্যম সহোদর দীনবন্ধু ন্যায়রত্নকে এই পদে নিযুক্ত করেন, তাহা হইলে সংস্কৃত-কলেজের ঐ পদে নিযুক্ত হইবার আমার কোন আপত্তি নাই। ইহার কারণ এই যে, তথায় যাইয়া আমি যেরূপ বন্দোবস্ত করিব, তাহাতে যদি সেক্রেটারি বাবু রসময় দত্ত মহাশয়ের সহিত মনান্তর ঘটে, কিম্বা আমার বন্দোবস্ত বা কথা রক্ষা না পায়, তাহা হইলে নিশ্চয় পদ পরিত্যাগ করিব। সহসা কার্য্য পরিত্যাগ করিলে, অর্থাভাবে আমার পরিবারবর্গের বিশেষ কষ্ট হইবে; কিন্তু এখানে আপনার নিকট দীনবন্ধুর কর্ম্ম থাকিলে, অন্নকষ্ট হইবে না। আর আমার মধ্যম সহোদর দীনবন্ধু অসাধারণ ধীশক্তিসম্পন্ন। অল্প- বয়সেই সংস্কৃত-কলেজে উচ্চ-শ্রেণীর পরীক্ষায় সর্ব্বপ্রধান হইয়া, কয়েক বৎসর সর্বোৎকৃষ্ট এসকলাশিপ পাইয়াছে।” সাহেব জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি আমাকে যেরূপ ব্যাকরণ, সাহিত্য ও নাটকাদি পড়াইয়া থাক, যদি দীনবন্ধু সেইরূপ পড়াইতে পারেন, তাহা হইলে তাহাকে এখানে তোমার পদে নিযুক্ত