পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চাকরি।
৮৫

পুরস্কারের টাকা হইতে সমগ্র সংস্কৃত মহাভারত পুস্তক ক্রয় করিয়া দিয়াছিলেন। অবশিষ্ট টাকা হইতে দরিদ্র লোকদিগকে বস্ত্র ক্রয় করিয়া দিয়াছিলেন। তৎকালে কোন পরীক্ষক নিজ হইতে ছাত্রকে পারিতোষিক প্রদান করেন নাই; বিদ্যাসাগর মহাশয়কে এ বিষয়ের প্রথম পথ-প্রদৰ্শক বলিতে হইবে। কিছুদিন পরে, রামকমল ভট্টাচার্য্য কঠিন রোগে আক্রান্ত হইয়া কষ্ট পাইতেছেন শুনিয়া, তিনি, বাবু দুর্গাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ডাক্তার মহাশয়কে সমভিব্যাহারে লইয়া, রামকমল ভট্টাচার্য্যের বাটী যাইয়া চিকিৎসা করাইতে প্রবৃত্ত হন। যতদিন তিনি সম্পূর্ণরূপ আরোগ্য লাভ করিতে না পারিয়াছিলেন, ততদিন অগ্রজ মহাশয়, বহুবাজারের বাসা হইতে সিমুলিয়ায় তাঁহাদের বাটী যাইতে আলস্যা করিতেন না। তাঁহার অনুরোধে দুর্গাচরণ বাবু ভিজিট্ গ্রহণ করেন নাই। ঐ সময়ে রামকমল ভট্টাচার্য্যের বাটীতে দেবনাথ মুখোপাধ্যায় মহাশয়ের সহিত দাদার প্রথম আলাপ হয়। তিনি উক্ত মুখোপাধ্যায় মহাশয়কে সম্মান করিতেন। তৎকালে নীলাম্বর বাবুর শৈশবাবস্থা। নীলাম্বর বাবু ঐ সময়ে বহুকাল হইতে রোগে আক্রান্ত হইয়া কষ্ট পাইতেছিলেন। অগ্রজ, নীলাম্বর বাবুর মস্তক দেখিয়া ব্যক্ত করেন যে, এই বালক অসাধারণ ধী-শক্তিসম্পন্ন। তিনি তাঁহাকে সংস্কৃত-কলেজে ভর্ত্তি করিয়া, লেখাপড়ার বন্দোবস্ত করিয়া দেন।

 সন ১২৫৬ সালের ৩০শে কার্ত্তিক নিশাযোগে অগ্রজ মহাশয়ের পত্নী এক সন্তান প্রসব করেন। তিনি, অধিক বয়স পর্য্যন্ত পুত্রলাভে বঞ্চিত ছিলেন; একারণ, পিতৃদেব তাঁহাকে নারায়ণের ঔষধ সেবন করান, তন্নিমিত্ত ঐ শিশুর নাম নারায়ণ রাখেন। ইহার কয়েক দিন পরে, অষ্টমবর্ষীয় পঞ্চম সহোদর হরিশ্চন্দ্র, লেখাপড়া শিক্ষার জন্য কলিকাতায় গিয়াছিল। কলিকাতায় উপস্থিতির কয়েক দিন পরে, সে বিষম বিসূচিকারোগে আক্রান্ত হইয়া, অকালে কালগ্রাসে নিপতিত হয়। তজ্জন্য অগ্রজ মহাশয়, কয়েক মাস শোকে অভিভূত হইয়াছিলেন। তিনি যথাসময়ে রীতিমত ভোজন করিতেন না