পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/১৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩২
বিদ্যাসাগর।

হাইকোর্টের অন্ততম অনুবাদক শ্যামাচরণ সরকার, রামরতন মুখোপাধ্যায়, নীলমণি মুখোপাধ্যায়, রাজকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রভৃতি অনেকেই তাঁহার নিকট সংস্কৃত শিক্ষা করিতেন। তাঁহার অধ্যাপনা প্রণালী এমনই কৌশলময় যে, অতি দুরূহ বিষয়ও অল্প দিনের মধ্যে সহজে শিক্ষার্থীদিগের আয়ত্ত হইত। সে শিক্ষাপ্রণালীর কথা শুনিয়া সংস্কৃত কলেজের তদানীন্তন পণ্ডিত-মণ্ডলীও চমৎকৃত হইতেন। শিক্ষার্থীকে শিক্ষা দিবার জন্য তিনি কিরূপ যত্ন ও পরিশ্রম করিতেন এবং তাঁহার শিক্ষা দিবার প্রণালীট কিরূপ ছিল, রাজকৃষ্ণ বাবুর সংস্কৃত শিক্ষাতত্ত্বটা বিবৃত করিলে, পাঠক তাহা বুঝিতে পরিবেন।

 রাজকৃষ্ণ বাৰু বহুবাজার নিবাসী হৃদয়রাম বন্দ্যোপাধ্যায়ের পৌত্র। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বাসার সম্মুখেই তাহার বাড়ী ছিল। তখন তাহার বয়স ১৫।১৬ বৎসর। তিনি হিন্দু কলেজে ইংরেজি পড়িয়া এই বয়েসেই পড়া শুনা ছাড়িয়া দেন। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সহিত তাঁহার আলাপ পরিচয় হইয়াছিল। তিনি প্রত্যহ সকাল সন্ধ্যায় বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বাসায় যাইতেন। এক দিন তিনি দেখিলেন, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মধ্যম ভ্রাতা দীনবন্ধু সুর করিয়া মেঘদূত পড়িতেছেন। সুন্দর সুরলয়ে উচ্চারিত সেই রসপূর্ণ ও ভাবময় শ্লোকের আবৃত্তি শ্রবণ করিয়া রাজকৃষ্ণ বাৰু বিমোহিত হইলেন। তখন তাহার সংস্কৃত শিথিবার বাসনা হইল। তিনি বিদ্যাসাগর মহাশয়কে আপনার অভিপ্রায় ব্যক্ত করিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয়ও তাঁহাকে সংস্কৃত শিখাইতে সন্মত হইলেন; কিন্তু তিনি ভাবিতে লাগিলেন, এত বয়সে মুগ্ধবোধ পড়িয়া সংস্কৃত শিখিতে গেলে সংস্কৃত শিক্ষা দুস্কর হইবে; অধিকন্তু