পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/১৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬৮
বিদ্যাসাগর।

স্থানান্তরে যথা প্রসঙ্গে সংবাদপত্রের আলোচনা করিব। এখানে বাঙ্গালা ভাষার পুষ্টিপরিচায়ক কয়েকখানি পুস্তকের উল্লেখ করিব মাত্র। এতদুল্লেখে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের রচনা-প্রকৃষ্টতা ও বাঙ্গালার চরম পুষ্টিকারি কতক উপলব্ধ হইবে।

 প্রকৃত বাঙ্গালা গদ্য-সাহিত্যের সৃষ্টি-কাল নির্ণয় করা দুরূহ। তবে আমরা প্রায় তিন শত বৎসরের পূর্ব্বে লিখিত যে গল্প- সাহিত্যের পুঁথি দেখিয়াছি, তাহার আলোচনা করিলে প্রতীত হয়, প্রকৃত গদ্য সাহিত্যের সৃষ্টি ইহার বহু পুর্ব্বে। ইহার ভাষা তেজোময়ী ও প্রাণময়ী না হউক, ইহার গঠনপ্রকারে মনে হয়, প্রকৃত গদ্য-সাহিত্য সৃষ্টির কাল নির্ণয় করা দুষ্কর। এইখানে ভাষার একটু নমুনা দিলাম,—

 “তাহার রূপ কি। স্বরূপ প্রকৃতিতে জড়িতা। বাহ্যজ্ঞান রহিত। তেঁহ নিত্য চৈতন্য। তাহাকে জানিব কেমনে। তেঁহ আপনাকে আপনি জানান। যে জন চেতন সেই চৈতন্য। অতএব স্বরূপ রূপ এক বস্তু হয়। বর্ত্তমান অনুমান এই এইরূপ। ***তাঁহার নাম কি। সপ্ত স্বর্গ পাতাল কি কি। ভূলোক

    খৃষ্টাব্দে লর্ড কর্ণওয়ালিস্ বাহাদুর যে সকল আইন সংগৃহীত করেন, ফরষ্ট্রর নামক এক সাহেব তাহা বাঙ্গাতে অনুবাদ করেন। ১৮৯৯ খৃষ্টাব্দে মাসন, ওয়ার্ড প্রভৃতি মিসনরী শ্রীরামপুরে আসিয়া অবস্থিতি করিলেন। ইঁহারা শ্রীরামপুরে একটী মুদ্রাযন্ত্র স্থাপন করিয়া দেবনাগর, প্রভৃতি নানা অক্ষর প্রস্তুত করেন এবং সংস্কৃত, বাঙ্গালা হিন্দি, উড়িয়া প্রভৃতি নানা ভাষায় বাইবেল অনুবাদিত করিয়া, ঐ যন্ত্রে মুদ্রিত করিতে লাগিলেন। কৃত্তিবাসী রামায়ণ, কাশীদাসী মহাভারত প্রভৃতি বাঙ্গালার প্রাচীন গ্রন্থসকলও উহাতে মুদ্রিত হইতে লাগিল।—বাঙ্গালা ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ক প্রস্তাব, ২০৩ পৃষ্ঠা।