ভাষার সহিত আধুনিক ভাষার তুলনা করিলে, সে তারতম্য বোধ হয় না। প্রাকৃত ভাষার সহিত বাঙ্গালা কি হিন্দী ভাষার যে তারতম্য, মাণ্ডেভাইল-রচিত পুস্তকের ভাষার সহিত আধুনিক ভাষার সেইরূপ তারতম্য বলিলে, বোধ হয় অত্যুক্তি হয় না। এইটুকু বঝাইবার জন্য, মাণ্ডেভাইলের ভাষার একটু নমুনা দিই—
“And zce schulle understonds that I have put this Boke out of Latyn in to French, and transolater it azen out of Frensche in to Enghysche, that very man of my Nacioun undirstonde it.”
নরোত্তম-রচিত ভাষার সহিত, আধুনিক ভাষার তুলনা করিলে, গঠন প্রক্রিয়ার তারতম্য বড় অনুভূত হইবে না। অবশ্য রচনার প্রণালী ও প্রথার তারতম্য অনেকটা পরিলক্ষিত হইবে। মাণ্ডেভাইলের ভাষার সৃষ্টির পরিচয় হইতে পারে, পুষ্টির নহে। নরোত্তমের ভাষার ঈষদ্ পুষ্টিরই লক্ষণ। তবে ১৮০০ খৃষ্টাব্দের প্রারম্ভে বা তাহার কিঞ্চিৎ পুর্ব্বে, বাঙ্গালা-গদ্য-সাহিত্যের প্রকৃত পুষ্ট-প্রারম্ভ।
নরোত্তমদাস-রচিত গদ্য-সাহিত্য-রচনার পর হইতে উনবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভের পুর্ব্ব পর্য্যন্ত বাঙ্গালা গদ্য-সাহিত্যের কিরূপ অবস্থা ছিল, তাহার প্রকৃত তত্ত্ব নির্ণয় করিবার কোন প্রকৃষ্ট প্রমাণ-নিদর্শন এ পর্য্যন্ত পাই নাই। তবে এই সময়ের মধ্যে লিখিত চিঠিপত্র, কবুলতি প্রভৃতিকে গদ্য-সাহিত্যের নিদর্শনস্বরূপ ধরিলে, গদ্য-সাহিত্যের পুষ্টিসম্বন্ধে নিতান্ত নিরাশ হইতে হয়।
বাঙ্গালা গদ্য-সাহিত্যের সৃষ্টি প্রাচীনত্বসম্বন্ধে ইংরেজী সাহিত্যসৃষ্টির নিকট অনেকটা গৌরবশালী হইলেও পুষ্টিসম্বন্ধে প্রকৃতই