পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/১৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭০
বিদ্যাসাগর।

ভাষার সহিত আধুনিক ভাষার তুলনা করিলে, সে তারতম্য বোধ হয় না। প্রাকৃত ভাষার সহিত বাঙ্গালা কি হিন্দী ভাষার যে তারতম্য, মাণ্ডেভাইল-রচিত পুস্তকের ভাষার সহিত আধুনিক ভাষার সেইরূপ তারতম্য বলিলে, বোধ হয় অত্যুক্তি হয় না। এইটুকু বঝাইবার জন্য, মাণ্ডেভাইলের ভাষার একটু নমুনা দিই—

 “And zce schulle understonds that I have put this Boke out of Latyn in to French, and transolater it azen out of Frensche in to Enghysche, that very man of my Nacioun undirstonde it.”

 নরোত্তম-রচিত ভাষার সহিত, আধুনিক ভাষার তুলনা করিলে, গঠন প্রক্রিয়ার তারতম্য বড় অনুভূত হইবে না। অবশ্য রচনার প্রণালী ও প্রথার তারতম্য অনেকটা পরিলক্ষিত হইবে। মাণ্ডেভাইলের ভাষার সৃষ্টির পরিচয় হইতে পারে, পুষ্টির নহে। নরোত্তমের ভাষার ঈষদ্ পুষ্টিরই লক্ষণ। তবে ১৮০০ খৃষ্টাব্দের প্রারম্ভে বা তাহার কিঞ্চিৎ পুর্ব্বে, বাঙ্গালা-গদ্য-সাহিত্যের প্রকৃত পুষ্ট-প্রারম্ভ।

 নরোত্তমদাস-রচিত গদ্য-সাহিত্য-রচনার পর হইতে উনবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভের পুর্ব্ব পর্য্যন্ত বাঙ্গালা গদ্য-সাহিত্যের কিরূপ অবস্থা ছিল, তাহার প্রকৃত তত্ত্ব নির্ণয় করিবার কোন প্রকৃষ্ট প্রমাণ-নিদর্শন এ পর্য্যন্ত পাই নাই। তবে এই সময়ের মধ্যে লিখিত চিঠিপত্র, কবুলতি প্রভৃতিকে গদ্য-সাহিত্যের নিদর্শনস্বরূপ ধরিলে, গদ্য-সাহিত্যের পুষ্টিসম্বন্ধে নিতান্ত নিরাশ হইতে হয়।

 বাঙ্গালা গদ্য-সাহিত্যের সৃষ্টি প্রাচীনত্বসম্বন্ধে ইংরেজী সাহিত্যসৃষ্টির নিকট অনেকটা গৌরবশালী হইলেও পুষ্টিসম্বন্ধে প্রকৃতই