পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/২০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭৬
বিদ্যাসাগর।

এই বাক্য শ্রবণ করিয়া পাত্রকে কহিলেন আমি অতি বৃহৎ যজ্ঞ করিব, তুমি আয়োজন কর।”

 ইহার পর এবং বিদ্যাসাগর মহাশয়ের “বাসুদেব চরিত” প্রকাশিত হইবার পূর্ব্বে রামজয় তর্কালঙ্কার প্রণীত “সাংখ্য ভাষা- সংগ্রহ”, লক্ষ্মীনারায়ণ ন্যায়ালঙ্কার প্রণীত “মিতাক্ষরাদপর্ণ,” কাশীনাথ তর্কপঞ্চানন প্রণীত “ন্যায়-দর্শন,” “পুরুষ-পরীক্ষা,” “হিতোপদেশ”, “জ্ঞান-চন্দ্রিকা,” “প্রবোধ-চক্রিকা” পুস্তক প্রকাশিত হয়। ইহার মধ্যে “পুরুষ-পরীক্ষা,” “হিতোপদেশ,” “প্রবোধ-চন্দ্রিকা,” প্রভৃতি ফোর্ট উইলিয়ম্ কলেজের পাঠ্য ছিল।[১] এই কয়খানি পুস্তক প্রায় এক প্রণালীতে লিখিত, তবে ইহাদের ভাষা পূর্ব্বোক্ত পুস্তকের ভাষা অপেক্ষা পুষ্টতর, লিপি পদ্ধতি বিশুদ্ধতর, সংস্কৃত শব্দ-প্রয়োগ বহুল। বাক্যাড়ম্বরে ও দুরান্বয়তা হেতু জটিল, নীরস ও সন্ধি প্রয়োগদোষে শ্রুতি-কঠোর। শ্রুতিসুখকারিতার জন্যই তো সন্ধি-নিয়ম। সকল পুস্তকের ভাষা-নমুনা উদ্ধার করিবার স্থান হইবে না। “পুরুষ-পরীক্ষা” হইতে একটু নমুনা দিলাম,—

 “বঞ্চক কহিতেছে, ভো রাজকুমায় আমি স্বাভাবিক লুব্ধ বণিক্ তোমার ধন লইয়া বাণিজ্যার্থে বৃহন্নৌকারোহণ করিয়া সাগর-পারে গিয়াছিলাম। সেখানে ক্রীতবস্তু বিক্রয় করিয়া মূল ধন হইতে একশত গুণ লাভ পাইয়া তথা হইতে আসিতে সমুদ্রের তটের নিকটে আমার বৃহত্তরণী মগ্ন হইল, তাহাতেই আমার সকল ধন নষ্ট হইল, এখন প্রাণমাত্রাবশিষ্ট হইয়া আসিয়াছি। সে যাহা

  1. এই সব পুস্তক মুদ্রিত হয়, অনেক অমুদ্রিত হস্তলিখিত পুস্তকপাঠ্য ছিল। আমরা হস্তলিখিত ভগবদ্গীতার একখানি পাণ্ডুলিপি দেখিয়াছি, ইহা পদ্যে অনুবাদিত।