পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/২১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮৬
বিদ্যাসাগর।

বাবু রসময় দত্ত তখনও কলেজের সেক্রেটারী ছিলেন। তিনি বিদ্যাসাগর মহাশয়কে এই পদে নিযুক্ত হইতে অনুরোধ করেন। শুনিতে পাই, এ পদ গ্রহণ করিলে অনেকটা কর্ত্তৃত্ব লোপ হইবে এবং কর্ত্তৃত্ব লোপ হইলে, কলেজের শিক্ষা-প্রণালীর শ্রীবৃদ্ধি সম্বন্ধে অনেকটা অন্তরায় ঘটিবে ভাবিয়া,তিনি এ পদ গ্রহণে অসম্মত হন; তবে এ পদে যাহাতে একজন প্রকৃত গুণবান্ উপযুক্ত লোক নিযুক্ত হন, ইহাই তাঁহার সম্পূর্ণ চেষ্টা ছিল। সেই সময় তাঁহার বাল্য-সহাধ্যায়ী মদনমোহন তর্কালঙ্কার কৃষ্ণনগর কলেজের প্রধান পণ্ডিত ছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় জানিতেন, তর্কালঙ্কার মহাশয় সাহিত্য-শাস্ত্রে সবিশেষ বুৎপন্ন। তিনি যোগাড়যন্ত্র করিয়া, তর্কালঙ্কার মহাশয়কে এই পদে নিযুক্ত করেন। তর্কালঙ্কার মহাশয়ের আসিবার পূর্ব্বে বিদ্যাসাগর মহাশয় দিন কতক সাহিত্য-শ্রেণীতে পড়াইয়াছিলেন।

 এই সময়ে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের চতুর্থ ভ্রাতা দ্বাদশবর্ষীয় বালক হরচন্দ্রের ওলাউঠায় মৃত্যু হয়। ভ্রাতৃশোকে বিদ্যাসাগর মহাশয় মৃত-কল্প হন। ভ্রাতার মৃত্যু সময়ে তিনি দেশে উপস্থিত ছিলেন। কার্য্যবশে তাঁহাকে কলিকাতায় আসিতে হইয়াছিল বটে; কিন্তু ভ্রাতৃ-শোকে তিনি পাঁচ ছয় মাস এক রকম আহার নিদ্রা পরিত্যাগ করিয়াছিলেন বলিলে হয়।

 এই দুর্ঘটনার পর সংস্কৃত কলেজের সেক্রেটারী রসময় দত্তের সহিত তাঁহার মনোবাদ ঘটে। তিনি শিক্ষা-প্রণালী সম্বন্ধে যে সব প্রস্তাব করিতেন, তাহা সময় সময় সেক্রেটারীর অনুমোদিত হইত না। মতান্তর মনোবাদের কারণ। তেজস্বী বিদ্যাসাগর কর্ম্ম পরিত্যাগ কমেন। পদত্যাগ করিতে দেখিয়া আত্মীয়, বন্ধু-