পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/২৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০২
বিদ্যাসাগর।

মহাশয়ের লেখার গুণে “শুভকরী” কতকটা প্রতিপত্তি লাভ করিয়াছিল। পণ্ডিত মাধবচন্দ্র গোস্বামীর লিপি কৌশলেও উহার সুনাম হওয়া যে ঠিক সংবাদ, তাহা আমরা অক্ষয়কুমার দত্তের ন্যায় শ্রদ্ধেয় ও বিশ্বস্ত লোকমুখে অবগত হইয়াছি। শুভকরীর অস্তিত্ব কিন্তু অল্প দিন মাত্র ছিল। এই সময় বিদ্যাসাগর মহাশয়, হিন্দু কলেজ, হুগলী কলেজ এবং ঢাকা কলেজের সিনিয়ার ছাত্রদিগের বাঙ্গালা পাঠ্যের পরীক্ষক হন। রচনার প্রশ্ন ছিল, স্ত্রী-শিক্ষা হওয়া উচিত কি না। এই সূত্রে কলিকাতার বর্ত্তমান বালিকা বা মহিলা বিদ্যালয় বীটন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ড্রিঙ্ক ওয়াটার বীটন্‌ সাহেবের সহিত তাঁহার সদ্ভাব সংস্থাপিত হয়।[১]

 যে সময় বিদ্যাসাগর মহাশয় ফোর্ট উইলিয়ম্‌ কলেজের “হেড্‌ রাইটার,” সেই সময় তিনি সংস্কৃত কলেজের “জুনিয়র” ও “সিনিয়র” বিভাগের বাৎসরিক পরীক্ষা গ্রহণ করিবার ভার প্রাপ্ত হন। এ কাজেও তাঁহাকে সাহেবের সঙ্গে সম্পর্ক রাখিতে হইয়াছিল। তিনি এবং জর্ম্মাণ-পণ্ডিত ডাক্তার রোয়ার সাহেব উপরি-উক্ত দুই পরীক্ষার প্রশ্ন প্রস্তুত করিতেন। রোয়ার সাহেব[২] সংস্কৃতজ্ঞ ছিলেন বটে; কিন্তু, সংস্কৃত প্রশ্নপ্রণয়নে তাঁহাকে বিদ্যাসাগর

  1. ১৮৪৯ খ্রীষ্টাব্দে বা ১২৫৬ সালে বীটন্‌ বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ইহার নাম প্রথমে ছিল হিন্দু-বালিকা বিদ্যালয়। প্রথমে ২৫ পঁচিশটী বালিকা লইয়া এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
  2. ইনি সাহিত্যদর্পণ নামক অলঙ্কার-গ্রন্থ ও ভাষা-পরিচ্ছেদ নামক ন্যায়শাস্ত্রের প্রসিদ্ধ গ্রন্থের ইংরেজীতে অনুবাদ করিয়াছেন।