পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/২৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বীডন-স্কুলের সম্বন্ধ।
২৪৫

উচিত; এবং বীটন্‌ সাহেবকেও বুঝাইয়াছিলেন এইরূপ। যে গাড়ী করিয়া মেয়ের স্কুলে যাতায়াত করিত তাহাতেও লেখা থাকিত এই কয়েকটি কথা। আমরা অধম হিন্দু, এখনও এই বুঝি, আমাদের পুর্ব্বতন রমণীরা যে শিক্ষায় অন্নপূর্ণরূপে কীর্ত্তিমতী হইয়া গিয়াছেন, সেই শিক্ষা এই শ্লোকের উপপাদ্য। আমাদের ক্ষুদ্র বুদ্ধির ধারণা, যাহাতে ইহ-পরকালের কর্ত্তব্য সাধন হয়, তাহাই হিন্দু রমণীর শিক্ষণীয় লেখা পড়া না শিথিয়া হিন্দু রমণীরা যদি সে কর্ত্তব্যসাধন করিতে পারে, তাহা হইলে বলিব, তাহাদের শিক্ষা হইয়াছে। শাস্ত্রকারেরা সেই শিক্ষায় লক্ষ্য রাথিয়া এই শ্লোক রচনা করিয়াছেন। কেবল গুরূপদেশ শুনিয়া সীতা দ্রৌপদী যে শিক্ষা লাভ করিয়াছিলেন সেই শিক্ষা হিন্দু রমণীর গ্রহণীয়। যাহা হউক, বিদ্যাসাগর মহাশয় ভাবিয়ছিলেন, লেখাপড় শিখিলে হিন্দুর সংসার সুখময় হইবে। তিনি এইটী ভাল ভাবিতেন, তাই ইহার জন্য প্রাণ উৎসর্গ করিয়াছিলেন। তাই বীটন্‌ সাহেবের মৃত্যু-সংবাদ শুনিয়া বালকের ন্যায় তিনি ক্রদন করিয়াছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয়, যাহা ভাবিয়া যাহা করুন, ফলে মেয়েদের লেখা-পড়া শেখায় এ মুহূর্ত্তে গরল উদগীর্ণ হইতেছে। বিদ্যাসাগর মহাশয় আজ লোকান্তরিত; কিন্তু যদি তাঁহার মত কোন ভাগ্যবান্ তাঁহার, প্রতিনিধিরূপে উখিত হন তাহা হইলে তাঁহাকে নিশ্চিত বলিতে হইবে –

“সুখের লাগিয়ে এ ঘর বাঁধিনু , আগুণে পুড়িয়া গেল।
অমিয়-সাগরে সিনান করিতে সকলি গরল ভেল।”

 ফলে যাহা হউক, তাঁহার উদ্দেশে সাধুতার আরোপ করিতে আপত্তি বোধ হয়,কাহারও হইবে না। তাৎকালিক শাসন-কর্ত্তৃপক্ষেরও সে সম্বন্ধে সন্দেহ কিছুই ছিল না। সেই জন্য তাঁহারা