এই সময় স্কুলবুক-সোসাইট এবং বর্ণেকিউলার লিটারেচার সোসাইট দ্বারা অনেক পুস্তক প্রচারিত হইত। এই সভাতেও বিদ্যাসাগর মহাশয়ের কর্তৃত্ব ছিল। ১৮৫৩ খৃষ্টাব্দে এই সভা নিয়ম নিৰ্দ্ধারণ করেন যে, মুদ্রাঙ্কণোদ্দেশে কেহ কোন গ্রন্থ রচনা করিলে তাহার আদর্শ শ্রীযুক্ত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও পাদরি রবিনসন সাহেব দেখিবেন। তাঁহার মনোনীত করিলে সেই আদর্শ লঙ সাহেবের নিকট অর্পিত হইবে। পাদরি লঙ্ তাঁহার গ্রাম্য পাঠশালায় তাহা পাঠ করিয়া নিরূপণ করিবেন, ঐ রচনা গ্রাম্য বালকদিগের বোধগম্য হয় কি না।
কেবল বিদ্যাসাগর মহাশয় নহেন, তদানীন্তন নিম্নলিখিত খ্যাতনাম ব্যক্তিগণও উক্ত সভার সহিত সংপৃক্ত ছিলেন।
ওয়াইলি সাহেব, লিটনকার সাহেব, বেলি সাহেব, কালবিন্ সাহেব, প্রাট্ সাহেব, পাদরি লঙ্ সাহেব, উডরে সাহেব, রাজা রাধাকন্ত দেব, জয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় ও রসময় দত্ত।[১]
১২৬০ সালে বা ১৮৫৩ খৃষ্টাব্দে বিদ্যাসাগর মহাশয় বীরসিংহ গ্রামে একটা অবৈতনিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করেন। এ বিদ্যালয়ে রাত্রিকালে কৃষকপুত্রেরা লেখা পড়া শিক্ষা করিত। বিদ্যাসাগর মহাশয় নিজের অর্থে বিদ্যালয়ের জমী ক্রয় করেন। বিদ্যালয়ের বাটী-নির্ম্মাণও তাঁহারই অর্থে হইয়াছিল। তিনি স্বয়ং কোদাল ধরিয়া গৃহনির্ম্মাণের জন্য প্রথমে মৃত্তিকা খনন করিয়াছিলেন। এই সময়ে একটী বালিক-বিদ্যালয়ও প্রতিষ্ঠিত হয়।
এই বিদ্যালয়ের ব্যয়-ভার তিনি সকলই স্বয়ং বহন করিতেন।
- ↑ নব্যভারত-১৩০০সাল, মাঘ, ফাল্গুন মাস,৫৪৬ পৃষ্ঠা মাস