পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৯৪
বিদ্যাসাগর।

এতানি লোকগুপ্ত্যর্থং কলেরাদৌ মহাত্মভিঃ।
নিবর্ত্তিতানি কর্ম্মাণি ব্যবস্থাপুর্ব্বকং বুধৈঃ॥”

 অর্থাৎ কলি-প্রারম্ভের পর, মহাত্মা পণ্ডিতগণ পূর্ব্বপ্রচলিত এই সকল কর্ম্ম সমাজরক্ষার্থ ব্যবস্থাপুর্ব্বক নিষেধ করিয়া গিয়াছেন। যথা দীর্ঘকাল ব্রহ্মচর্যা, দেবরের দ্বারা পুত্র উৎপাদন, পরিণীতা নারীর পত্যন্তর গ্রহণ, অসবর্ণা কন্যার সহিত দ্বিজাতিদের বিবাহ, দত্তক ও ঔরস ভিন্ন ক্ষেত্রজ প্রভৃতিকে পুত্র বলিয়া গ্রহণ এবং গৃহস্থের দাস, গোপাল, কুলমিত্র অর্দ্ধসীরী শূদ্রজাতির মধ্যে ইহাদিগের অন্নভোজন ইত্যাদি কলিযুগারম্ভের পরেও এই বচননিষিদ্ধ কতিপয় কার্য্য়ের অনুষ্ঠান দেখাইয়া এবং স্মৃতি ও পুরাণের বিরোধে স্মৃতির বলবত্তা শাস্ত্রসম্মত, এই প্রমাণে কেহ কেহ এই বচনের অগ্রাহ্য়তা প্রতিপাদন করেন। আমরা বলি, তাহা নহে। ঐ সকল কর্ম্ম কলিযুগ-প্রারম্ভের পরে যে নিষিদ্ধ হয়, ইহা ঐ বচন প্রদর্শনেই সপ্রমাণ হইয়া থাকে। তবে ঠিক কোন্ সময়ে যে ঐ নিষেধবিধি প্রচলিত হয়, তাহা বলা কঠিন। যাহা হউক, যত দিন ঐ নিষেধ প্রচারিত হয় নাই, তত দিন কলিযুগেও ঐ সমস্ত কার্য্য়ের অনুষ্ঠান প্রচলিত ছিল, অতএব পরাশরসংহিতা কেবল কলিযুগের ধর্ম্মনির্ণয়ক হইলেও ক্ষতি নাই। কেননা, পরাশরের মত কলিতে কিছু দিন প্রচলিত ছিল, একেবারে স্থিতিশুন্য হইতেছে না। পরাশরমতে ইতিপূর্ব্বে চতুর্ব্বিধ পুত্র উক্ত হইয়াছে। ভবিষ্যতে দাস গোপালক, কুলমিত্র ও অর্দ্ধসীরী শূদ্রদিগের অন্ন-ভোজন বিহিত হইবে, এইরূপ সকল মতের উপর নির্ভর করিয়া সমস্ত কলিযুগের এই ধর্ম্ম এইরূপ স্থির করিলে, অদিপুরণ প্রভৃতির রচন স্থিতিশূন্য হইয়া পড়ে। প্রবলমতের সঙ্কোচ করিয়াও