পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিধবা-বিবাহ।
৩০১

 পল্লীগ্রামে চাষা-ভূষার মধ্যে বিদ্যাসাগরের নাম—“বিধবার বিয়ে দেওয়া বিদ্যাসাগর” হইয়াছিল।

 দেশ জুড়িয়া অন্দোলন হইয়াছিল। রাজপুরুষদিগের কর্ণগোচর করাইতে না পারিলে প্রকৃত কার্য্য় হওয়া দুষ্কর ভাবিয়া, বিদ্যাসাগর মহাশয়, “বিধবা বিবাহ হওয়া উচিত কি না” পুস্তকের ইংরাজি অনুবাদ করেন। আনন্দকৃষ্ণ বাবু, শ্রীনাথ বাবু প্রভৃতি অনেকেই অনুবাদে সাহায্য করিয়াছিলেন। অনুবাদ মুদ্রিত হইবার সময় প্রসন্নকুমার সর্ব্বাধিকারী মহাশয় ইহার প্রুফ সংশোধন করিয়া দেন।

 ইংরেজী অনুবাদ হওয়ায়, বাস্তবিকই সবিশেষ সুযোগ উপস্থিত হইয়াছিল। বিধবা-বিবাহ সম্বন্ধে আইন-বিষয়ক অনেক অন্তরায় ছিল। সেই অন্তরায় দুর করিবার অভিপ্রায়ে বিদ্যাসাগর মহাশয় একটা আইন করাইবার সঙ্কল্প করিয়াছিলেন। ইংরেজি অনুবাদ পড়িয়া, হিন্দু বিধবাদের বড় কষ্ট, হিন্দুবিধবাদের বিবাহ হওয়া উচিত, এতৎসম্বন্ধে আইন-সংক্রান্ত অন্তরায় দূরীভূত হওয়া উচিত, রাজপুরুষদের মনে এইরূপ একটা সুদৃঢ় ধারণা হইয়া যায়। ইংরেজি অনুবাদ প্রচারিত হইবার পর, বিদ্যাসাগর মহাশয় আইন করাইবার জন্য তাৎকালিক প্রধান প্রধান রাজপুরুষদিগের সহিত পরামর্শ করিতেন। তাঁহারা বিদ্যাসাগর মহাশয়ের কথায় মন্ত্রমুগ্ধ হইয়াছিলেন। তাঁহাদের পরামর্শে বিদ্যাসাগর মহাশয় ১৮৫৫ খৃষ্টাব্দের ৪ঠা অক্টোবর বা ১৮৬২ সালের আশ্বিন মাসে এক হাজার লোকের স্বাক্ষরিত এক আবেদন-পত্র ব্যবস্থাপক সভায় পেশ করেন। আবেদন ইংরেজিতে হইয়াছিল। তাহার মর্ম্মানুবাদ এই,—