পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২৮
বিদ্যাসাগর।

পুস্তিকা প্রকাশিত হইলে পর, পিতা ঠাকুর দাস পুত্রকে যথেষ্ট উৎসাহ দিয়াছিলেন।

 লেখকের কোন বন্ধুকে বিদ্যাসাগর মহাশয় স্বয়ং বলিয়াছিলেন,—“পিতা মাতার মত না থাকিলে, অন্ততঃ তাঁহাদের জীবদ্দশায় এ কার্য্যে হস্তক্ষেপ করিতাম না।” হিতবাদীতে এই কণা প্রকাশিত হইয়াছিল।

 আমরা অন্য কোন সূত্রে এ কথা শুনি নাই। তিনি পিতাকে ভগবান্ ভাবিতেন, তিনি পিতার নিষিদ্ধ কথা তাঁহার জীবদ্দশায় মানিবেন, আর তাঁহার দেহান্তে মানিবেন না, এরূপ ভাবিতেও আমাদের কেমন কষ্ট হয়। তবে পুত্রকে যখন পিতার শাস্ত্রদর্শী বলিয়া ধারণা, আর পুত্রও যখন শাস্ত্রমতে বিধবা-বিবাহ-প্রচলনের প্রয়াসী, তখন পিতার সম্মতি থাকিতে পারে। মাতা সম্বন্ধেও অন্য কথা কি?

 পিতামাতার অমত হইলে, বিদ্যাসাগর নিশ্চিতই বিধবাবিবাহ-প্রচলনের প্রয়াসে বিরত হইতেন। পিতামাতাই যে তাঁহার উপাস্য দেবতা ছিলেন। তিনি প্রায়ই বন্ধুবান্ধবকে বলিতেন,—“পিতামাতাই ঈশ্বর।” পিতামাতার তুষ্টি-সাধনই তঁহার জীবনের চরম কামনা ছিল। নিজের বিশ্বাস থাকুক বা নাই থাকুক, পিতামাতার যাহাতে তুষ্টি, তৎসাধন পক্ষে তিনি কখন কোনরূপ ক্রটি করিতেন না। এক বার বীরসিংহ গ্রামে জগদ্ধাত্রী পূজা-উপলক্ষে তাহার পিতা ও মাতার মধ্যে মতবিরোধ উপস্থিত হইয়াছিল। পিতার ইচ্ছা—পূজা-উপলক্ষে বাদ্যবাজন ধুমধাম হয়। মাতার ইচ্ছা—এ সব না করিয়া, কেবল গরীবকাঙ্গালীদিগকে খাওয়ান হয়। বিদ্যাসাগর মহাশয়,