পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরোপকার।
৩৫৩

চিঠি লইয়াছিলেন, ইনি এক্ষণে এই চাকুরীর জন্য প্রিয়নাথ বাবুর নামে চিঠি লইবার জন্য বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নিকট যান। প্রিয় বাবুর সহিত বিদ্যাসাগর মহাশয়ের আদৌ আলাপ-পরিচয় ছিল না। সেই জন্য তিনি পত্র দিতে ইতস্ততঃ করেন; কিন্তু লোকটির নিতান্ত পীড়াপীড়িতে পত্র না দিয়া থাকিতে পারেন নাই। লোকটা চিঠি লইয়া, প্রিয় বাবুর নিকট যান। প্রিয় বাবুর আফিসে পাঁচটী চাকুরী খালি ছিল। কিন্তু এই কয়টা চাকুরীর জন্য পরীক্ষা দিবার নিয়ম হইয়াছিল। প্রিয় বাবু লোকটীকে পরীক্ষা দিতে বলেন। লোকটী সম্মত হন। পরীক্ষায় কিন্তু তিনি সপ্তম হইয়াছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের কথা রক্ষা হয় না ভাবিয়া, প্রিয় বাবু অত্যন্ত কাতর হন। অবশেষে কর্তৃপক্ষকে বলিয়' কহিয়া, তিনি আর দুইটী নূতন পদ বাড়াইয়া লন। ইহার একটা বিদ্যাসাগর মহাশয়ের লোক প্রাপ্ত হন।

 বিদ্যাসাগর মহাশয় পরে এই সংবাদ পাইয়া বলেন,—“বিচিত্র সংসার! আমি যাহার প্রকৃত উপকার করিয়াছি, সে আমার কথা রাখিল না; আর উপকার করা ত দূরের কথা, যাহার সহিত আলাপমাত্র নাই, তিনি আমার মর্য্যাদা রক্ষা করিলেন।”

 এই কথা বলিয়াই বিদ্যাসাগর মহাশয়, তদ্দণ্ডেই ঘা বাজারে গিয়া, প্রিয়নাথ বাবুর সহিত আলাপ করেন।[১]

 আর এক বার বিদ্যাসাগর মহাশয়, একটা লোকের চাকুরী করিয়া দিবার জন্য একটা লোককে অনুরোধ করিতে যান। এই ব্যক্তি, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের চেষ্টায় এক-খানি সংবাদ পত্রের সম্পাদক হইয়াছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয়ে অনুরোদ শুনিয়াই,


  1. আনন্দকৃষ্ণ বসু মহাশয়ের নিকট হইতে এই কথা নিয়াছিলাম। তাঁহার নিকট হিতে প্রিয়নাথ বাবুর সন্ধান লইয়া, বিদ্যাসাগর মহাশয় প্রিয়নাথ বাবুর সহিত আলাপ নিতে যান।