পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৫৮
বিদ্যাসাগর।

টাকার দেনার দায়ে বাটী নীলাম হইবার উপক্রম হইয়াছিল। বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয় বিদ্যাসাগর মহাশয়কে উপস্থিত দায় জানাইলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয়, ক্ষণবিলম্ব না করিয়া, তাঁহাকে ঐ ৫০০ (পাঁচ শত) টাকা দান করেন।

 একটা মহত্তর দান ও দয়ার পরিচয় এই খানেই দিই। রাজকৃষ্ণ বাবুকে জিজ্ঞাসা করিলেও, তিনি ইহার মূল-তত্ত্ব স্মরণ করিয়া বলিতে পারেন নাই। ইহার বিস্তৃত বিবরণ, বিদ্যারত্ন মহাশয়ের লিখিত বিদ্যাসাগরের জীবনচরিতে বিবৃত আছে।

 “আমাদের বাটীর সন্নিহিত রাধানগর-নিবাসী[১]জমিদার ৺বৈদ্যনাথ চৌধুরী এ প্রদেশের মধ্যে সম্ভ্রান্ত ও মান্যগণ্য জমিদার ছিলেন। বাবু রামপ্রসাদ রায়ের নিকট ইনি, জমিদারী বন্ধক রাখিয়া, পঞ্চাশ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। ইঁহার পুত্রও[২] ২৫ হাজার টাকা লইয়াছিলেন। এই পাঁচাত্তর হাজার টাকা কিস্তিবন্দী করিতে যাইয়া, বাবু শিবনারায়ণ চৌধুরী, কলিকাতাস্থ রায় মহাশয়ের দপ্তরখানায় পঞ্চত্ব প্রাপ্ত হন।

 অতঃপর বিদ্যাসাগর মহাশয় তাঁহার পুত্রদ্বয় ও পত্নীর উদ্ধার করেন। এতৎসম্বন্ধে বিদ্যারত্ন মহাশয় লিখিয়াছেন,—

 অনুন্তর ক্ষীরপাই রাধানগরনিবাসী মৃত শিবনারায়ণ চৌধুরীর পুত্রদ্বয় এবং মৃত সদানন্দ ও শিবনারায়ণ চৌধুরীর বিধবা পত্নী, ইহাঁরাও কলিকাতায় বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নিকট যাইয়া রোদন করিতে লাগিলেন। ইঁহাদের রোদমে অগ্রজ মহাশয়েরও চক্ষে জল আসিল। অগ্রজ ইঁহাদিগকে ঋণজাল হইতে মুক্ত করিবার


  1. এই রাধানগর “ক্ষীরপাই রাধানগর” বলিয়া খ্যাত—গ্রন্থকার।
  2. হরিনারায়ণের পুত্রের নাম শিবনারায়ণ চৌধুরী।—গ্রন্থকার।