পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬২
বিদ্যাসাগর।

করিয়াছিলেন; কিন্তু ইহা তিনি বেশী দিন রাখিতে পারেন নাই; অবশেষে তিনি বিদ্যাসাগর মহাশয়কে হিন্দুপেট্রিয়টের ভারার্পণ করেন। সেই সময়ে বাবু কৃষ্ণদাস পাল মহাশয় “বৃটিশ ইণ্ডিয়া এসোসিয়েশনের” কেরাণী ছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় তাঁহাকে উপযুক্ত বিবেচনা করিয়া হিন্দুপেট্রিয়টের সম্পাদক পদে নিযুক্ত করেন। কৃষ্ণদাস বাবু কেবল সম্পাদক নহেন; স্বত্বাধিকারীও হইলেন। ইহার জন্য তাঁহাকে এক কপর্দকও ব্যয় করিতে হয় নাই। উদীয়মান লেখক কৃষ্ণদাসের প্রতি বিদ্যাসাগরের এরূপ অসম্ভব বিশ্বাস প্রীতি দেখিয়া সেই সময়ে অনেকেই চমকিত হইয়াছিলেন। দীর্ঘদর্শী বিদ্যাসাগর খুব বুঝিয়াছিলেন,—কৃষ্ণদাস বাবু শক্তিশালী প্রতিভা সম্পন্ন পুরুষ। কৃষ্ণদাসের অশেষ শক্তিসম্পন্নতার অনুভবে বিদ্যাসাগর আপনার সুতীক্ষ্ণ-শক্তিশালিতার পরিচয় দিশাছিলেন। তৎকালে তাঁহার আত্মীয়, বন্ধু ও বান্ধবেরা তাহা বুঝিতে পারেন নাই; কিন্তু পরে কৃষ্ণদাসের অসীম শক্তিশালিতার অকাট্য প্রমাণে তাঁহাদিগকেও লজ্জায় মস্তক অবনত করিতে হইয়াছিল।

 প্রিন্সিপাল-পদ পরিত্যাগ করবার বৎসর দুই পূর্ব্বে বিদ্যাসাগর মহাশয় কেবল পরপোকারার্থ“সোম প্রকাশ”প্রকাশ করিয়াছিলেন। এক দিন সারদাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায় নামক এক ব্রাহ্মণ তাঁহার নিকটে আসিয়া সজল নয়নে বলিলেন,—“মহাশয়! রক্ষা করুন। সংসার চলে না।” সারদাপ্রসাদ সংস্কৃত কলেজের সুশিক্ষিত ছাত্র ছিলেন। তিনি ইংরেজী ও সংস্কৃত ভাষায় বুৎপন্ন হইয়া বৃত্তি প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। দৈববিড়ম্বনায় তাঁহার শ্রুতি-শক্তি নষ্ট হয়। বিদ্যাসাগর মহাশয় তাঁহার দুঃখে বিগলিত হইয়া তৎপরিবার-