পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৪৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০৬
বিদ্যাসাগর।

সেই বেশ্যারই। মনোমালিন্যের মূলোৎপত্তি এইখানেই। পরে যাঁহার উপর সন্দেহ হয়, তাঁহারই কোন প্রিয় পোষ্য শিক্ষকের পদচ্যুতি লইয়া মতান্তর পাকাপাকি হইয়া উঠিয়াছিল। এই সময় বিদ্যাসাগর মহাশয় স্কুলের সেক্রেটরীপদ পরিত্যাগ করেন। ৺ঠাকুরদাস চক্রবর্তী এবং মাধবচন্দ্র ধাড়া “ট্রেণিং স্কুলে”র বেঞ্চি, চেয়ার প্রভৃতি সরঞ্জাম স্থানান্তরে লইয়া গিয়া, “ট্রেণিং একাডেমি” নামক একটা নূতন স্কুল স্থাপিত করেন। ট্রেনিং স্কুলের অবশিষ্ট অধিষ্ঠাতৃগণ, বিদ্যাসাগর মহাশয়, রাজা প্রতাপচন্দ্র সিংহ, রমানাথ ঠাকুব, হীরালাল শীল, রামগোপাল ঘোষ এবং রায় হরচন্দ্র ঘোষ বাহাদুরকে স্কুল পরিচালনের ভার গ্রহণ করিতে অনুরোধ করেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় ব্যতীত আর সকলেই ভার গ্রহণে সম্মত হন। বিদ্যাসাগর মহাশয় বলেন, “আর তাঁবেদারীতে কাজ করিতে প্রবৃত্তি হয় না।” প্রতিষ্ঠাতৃগণ বলিলেন—“তাঁবেদারী করিতে হইবে না; স্কুল আপনারই হইল; আমরা পৃষ্ঠপোষক রহিলাম মাত্র।” অনেক সাধাসাধনায় বিদ্যাসাগর মহাশয় ভার গ্রহণ করেন।

 ১২৬৮ সালের বৈশাখ বা ১৮৬১ খৃষ্টাব্দের এপ্রেল মাসে উপরোক্ত সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিগণ লইয়া একটা কমিটী হয়। রাজা প্রতাপচন্দ্র সিংহ সভাপতি ও বিদ্যাসাগর মহাশয় সেক্রেটরী হইয়াছিলেন। ১৮৬১ খৃষ্টাব্দেব নবেম্বর মাসে রায় হরচন্দ্র ঘোষ ও বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নামে বাঙ্গাল ব্যাঙ্কে হিসাব খোলা হয়। ১৮৬৪ খৃষ্টাব্দে “ট্রেনিং স্কুলের” নাম “হিন্দু মেট্রপলিটন ইনষ্টিটিউশন” হয়। ১৮৬৮ খৃষ্টাব্দে মেট্রপলিটনের ভার একা বিদ্যাসাগর মহাশয়ের হস্তে নিপতিত হয়।