পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৪৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৩৪
বিদ্যাসাগর।

গাছি, উত্তরপাড়ার পতনের পর হইতে তাঁহার সাহস, উদ্যম, অধ্যবসায়, চেষ্টা, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক শক্তি যা কিছু সকলেরই হ্রাস হইয়াছিল। আর তিনি শোধরাইতে পারিলেন না। স্বাস্থ্যরক্ষার্থ প্রায়ই তাঁহাকে ফরাসভাঙ্গা, বর্দ্ধমান, কাণপুর প্রভৃতি স্থানে থাকিতে হইত। তবুও কিন্তু কার্য্যবীরের কার্য্য বিরাম ছিল না।

 পতনাঘাত হইতে কতকটা আরোগ্য লাভ করিয়া বিদ্যাসাগর মহাশয় ১৮৬৭ সালের প্রারম্ভে বীরসিংহ গ্রামে গমন করিয়াছিলেন। এই সময় এক অবীরা বিধবার আত্মীয়েরা তাঁহার জমী আত্মসাৎ করিবার চেষ্টা করিয়াছিলেন। সেই বিধবা বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নিকট কাঁদিয়া কাটিয়া আপন দুঃখ জ্ঞাপন করেন। তিনি বিধবার আত্মীয়দিগকে ডাকাইয়া আনিয়া বিধবার জমী আত্মসাৎ করিতে নিষেধ করেন। তাঁহারা তাঁহার কথা শুনেন নাই; বরং তাঁহারা বিধবার নামে আদালতে নালিশ করিয়াছিলেন। কিন্তু বিদ্যাসাগর মহাশয় এ বিধবার যথেষ্ট সহায়তা করিতেছেন শুনিয়া, তাঁহারা আর আদালতে উপস্থিত হন নাই।

 এই সময় বিদ্যাসাগর মহাশয় বীরসিংহের বাটীতে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা করেন,—

 মধ্যম ও তৃতীয় সহোদর এবং স্বীয় পুত্রের পৃথক্ পৃথক্ ভোজনের ব্যবস্থা করিয়া দেন। সকলেরই মাসিক ব্যয়ের নিমিত্ত যাহার যেরূপ টাকার আবশ্যক, সেইরূপ ব্যবস্থা করেন। এরূপ করিবার কারণ এই, একত্র অনেক পরিবার থাকিলে কলহ হইবার সম্ভাবনা; বিশেষতঃ বহুপরিবার একত্র অবস্থিতি করিলে