পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৪৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৪২
বিদ্যাসাগর।

মহাশয় মর্ম্মাহত হন। ইহা যাহাতে না হয়, তাহাই করিবার জন্য তাঁহার প্রাণান্ত পণ হইল। সহরের অনেক বড় বড় লোক কিন্তু ইহার পক্ষে মত দিয়াছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় ঠিক করিলেন, এক রামগোপাল ঘোষই এই প্রস্তাবের প্রতি বাদ করিবার উপযুক্ত লোক। তিনি তৎক্ষণাৎ রামগোপাল ঘোষের নিকট যাইয়া উপস্থিত হন। রামগোপাল প্রতিবাদ করিতে সম্মত হন নাই। তখন বিদ্যাসাগর মহাশয় চিন্তা করিয়া সিদ্ধান্ত করিলেন, রামগোপাল বড় মাতৃভক্ত; মায়ের কথা ঠেলিতে পারিবেন না; অতএব এ সম্বন্ধে তাঁহার মাকে দিয়া অনুরোধ করিতে হইবে। এই ভাবিয়া পরদিন প্রাতঃকালে বিদ্যাসাগর মহাশয় রামগোপালের বাড়ীতে যাইয়া তাঁহার ঠাকুরদালানে বসিয়া থাকেন। সেই সময় রামগোপালের জননী গঙ্গাস্নান করিরা বাড়ী আসেন। তিনি বিদ্যাসাগরকে দেখিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন,—"ঈশ্বর! তুমি যে এখানে ব’সে?” বিদ্যাসাগর বলিলেন,—“মা! কলে মড়া পোড়াইবার ব্যবস্থা হইতেছে।” রামগোপালের জননী শুনি অবাক্! বলিলেন,—“বাবা! এ ব্যবস্থা যাহাতে না হয়, তাহার উপায় কি নাই?” বিদ্যাসাগর বলিলেন, “এক উপায় আছে। কাল টাউনহলে সভা করিয়া ইহার মীমাংসা হইবে। আপনার ছেলে যদি সভায় যাইয়া ইহাতে আপত্তি করে, তাহা হইলে এ ব্যবস্থা বন্ধ হইতে পারে।” রামগোপালের জননী বলেন,—“তা যদি হয়, আমি এখনই রামগোপালকে বলবো।” পরে তিনি বাড়ীর ভিতর গিয়া রামগোপালকে অনুরোধ করেন। রামগোপাল বাহিরে আসিয়া বিদ্যাসাগরকে বলেন,—“মাকে বলেছ কি