মুক্ত হইত। বর্দ্ধমান হইতে বিদ্যাসাগর মহাশয় প্রায় বীরসিংহ গ্রামে যাতায়াত করিতেন। সেই সময় যত দীন-দরিদ্র বালক, তাঁহার পাল্কী ধরিয়া তাঁহাকে ঘিরিয়া দাঁড়াইত। তিনি কাহাকেও মিঠাই, কাহাকেও পয়সা, আর কাহাকেও বস্ত্র দান করিতেন। দয়ালু বিদ্যাসাগর যাইতেছেন শুনিলে, সাহায্য-কামনা না থাকিলেও তাঁহাকে একবার দেখিবার জন্য শত শত লোক উদ্গ্রীব হইয়া থাকিত।
ঋণ-পরিশোধ একান্ত প্রয়োজনীয় হইয়াছিল। হিন্দু পেট্রিয়টে বিদ্যাসাগর মহাশয়, যে পত্র লিখিয়াছিলেন, তাহাতে প্রকাশ পায়, তাঁহার দেনা ২০।২২ হাজার টাকা। দেনা হইয়াছিল, প্রকৃত অর্দ্ধলক্ষাধিক টাকা। পত্র লিখিবার পূর্ব্বে বিদ্যাসাগর মহাশয় অনেক দেনা শুধিয়াছিলেন।[১] এক্ষণে অবশিষ্ট ঋণ-পরিশোধের গত্যন্তর না দেখিয়া, তিনি মুরশিদাবাদের মহারাণী স্বর্ণময়ীর সরকার হইতে ঋণ চাহিয়া পাঠাইয়াছিলেন। মহারাণীর পরিবারের সহিত ইতিপূর্ব্বে তাঁহার বেশ ঘনিষ্ঠতা হইয়াছিল। এ কথা পূর্ব্বে প্রকাশিত হইয়াছে। মহারাণী মধ্যে মধ্যে বিদ্যাসাগর মহাশয়কে আবশ্যকমত টাকা ধার দিতেন। বিদ্যাসাগর মহাশয়ও যথাসময়ে পরিশোধ করিতেন। ১২৮৬ সালের ২০শে কার্তিক বা ১৮৬৯ খৃষ্টাব্দের ৪ঠা নবেম্বর বিদ্যাসাগর মহাশয় নিম্নলিখিত পত্র লিখিয়া মহারাণীর সরকার হইতে টাকা ধার চাহিয়াছিলেন,—
শুভাশিযঃসন্তু—
সাদরসম্ভাষণমাদনম্—
আপনি অবগত আছেন বিধবা বিবাহ কার্য্যোপলক্ষে আমি
- ↑ শ্রীযুক্ত শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন এ কথা বলিয়াছেন।