পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৫১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ডাক্তার দুর্গাচরণ।
৪৭৭

বিষয়-সম্পত্তির গোলযোগ হওয়ায়, তাঁহাকে ম্যানেজারপদে নিযুক্ত করা হইয়াছিল। তিনি বিনা পারিশ্রমিকে, বিষয়ের গোলযোগ মিটাইবার চেষ্টা করিয়াছিলেন। কিন্তু বাবুর আত্মীয় ও কর্ম্মচারীবর্গের নানা বিষয়ে মতানৈক্য দেখিয়া, এ কার্য্যভার পরিত্যাগ করেন।

 বিদ্যাসাগর মহাশয়ের তিনটী চিকিৎসক বন্ধু সর্ব্বকার্য্যে সহায় ছিলেন। ডাক্তার দুর্গাচরণ বন্দোপাধ্যায়, নীলমাধব মুখোপাধ্যায় এবং মহেন্দ্রলাল সরকার। দুর্গাচরণের কিছুকাল পুর্ব্বে নীলমাধব লোকান্তরিত হন। মহেন্দ্রলাল আজ নই। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের লোকান্তর হইবার পর ইঁহার লোকান্তর হয়। মহেন্দ্রলাল চিকিৎসা-রাজ্যের উচ্চ সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হইয়াছিলেন। এই মহেন্দ্রলালের সঙ্গে কিন্তু বৎসর কতক পরে বিদ্যাসাগরের দারুণ মনোবাদ সংঘটিত হয়। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের কনিষ্ঠ কন্যার সঙ্কটাপন্ন পীড়াসূত্রে এই মনোবাদ উপস্থিত হইয়াছিল। মহেন্দ্র বাবু বিদ্যাসাগর মহাশয়-প্রেরিত আহ্বান-পত্র না পড়িয়া রাখিয়া দিয়াছিলেন; পরে সেই পত্র পড়িয়া চিকিৎসার্থ আগমন করেন। বিদ্যাসাগর মহাশয়, তাঁহার বিলম্বে আগমনের হেতু অবগত হইয়া, ক্ষুণ্ন ও ক্রুদ্ধ হন। ইহাতেই মনোবাদের সূত্রপাত। ক্রমে মনোবাদ এত দুর ঘনীভূত হইয়াছিল যে, কোন স্থানে দুই জনের সাক্ষাৎ হইলে চারি চক্ষু একত্র হইত না। সেই চারিটী বিশাল চক্ষুর পুনঃসম্মিলন হইয়াছিল মাত্র, বিদ্যাসাগরের মৃত্যুর পূর্ব্বে,—রুগ্নশয্যায়! মহেন্দ্রলাল বিদ্যাসাগর মহাশয়কে দেখিতে গিয়াছিলেন। মৃত্যুশয্যায় মনের মালিন্য-ভেদ ও মিত্রমিলন মহানাটকেরই বিষয়ীভূত। মৈত্রী-বিচ্ছেদে বিদ্যাসাগর মহাশয় কখন