পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পিতৃ-পরিচয়।
৩৯

বড় দুষ্ট।” বিদ্যাসাগর মহাশয় বলিলেন,—“দেখ ছেলেবেলায় আমি অমনই ছিলাম; পাড়ার লোকের বাগানের ফল পাড়িয়া চুপি চুপি খাইতাম; কেহ কাপড় শুখাইতে দিয়াছে, দেখিলে, তাহার উপর মলমূত্র ত্যাগ করিয়া আসিতাম; লোকে আমার জ্বালায় অস্থির হইত।”

  বিদ্যাসাগর মহাশয় নিজ “বাল্য-দুষ্টুমির” কথা নিজে স্বীকার করিয়াছেন। এতদ্ব্যতীত তাহার আরও “দুষ্টুমি"র দুই একটা দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। মথুর মণ্ডল নামে একজন প্রতিবেশী ছিল। মথুর মণ্ডলের জননী ও স্ত্রী, বালক বিদ্যাসাগরকে বড় ভালবাসিতেন। বালক বিদ্যাসাগর কিন্তু প্রায় প্রত্যহ পাঠশালায় যাইবার সময় মথুরের বাড়ীর দ্বারদেশে মলমূত্র ত্যাগ করিতেন। মথুরের মাতা ও স্ত্রী দুই হস্তে তাহা মুক্ত করিতেন। বধু কোন দিন বিরক্ত হইলে, শাশুড়ী বলিতেন,—“ইহাকে কিছু বলিও না। ইহার ঠাকুরদাদার মুখে শুনিয়াছি, এ ছেলে একজন বড় লোক হইবে।” এক দিন বালক বিদ্যাসাগরের গলায়:ধানের “সুঙা” আটকাইয়া গিয়াছিল। তাহাতে তিনি মৃতকল্প হন। পিতামহী অনেক কষ্টে সেই সুঙা’ বাহির করিয়া দিলে তিনি রক্ষা পান। দুষ্ট বালক প্রত্যহ ধান্যক্ষেত্রের পাশ দিয়া যাইতে যাইতে ধানের শিষ তুলিয়া চিবাইয়া খাইত। এক দিন তাহার উক্তরূপ ফল ফলিয়ছিল। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সেই বাৰ্দ্ধক্যের শান্ত দান্ত স্থির ধীর মূর্ত্তি দেখিলে কেন্থ মনে করিতে পারিত না যে, বাল্যে তিনি এত দুষ্ট ছিলেন। বস্তুতঃ প্রায় দেখিতে পাই, অনেকের বাল্যের দুষ্ট প্রকৃতি অধিক বয়সে পরিবর্তিত হইয়া যায়।

 পাঠশালের বিদ্যাসাঙ্গ হইলে, কালীকান্ত, ঠাকুরদাসকে এক