পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৭২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৯০
বিদ্যাসাগর।

ছিলেন। কোন কারণে তিনি প্রতিজ্ঞা করেন যে, ঈশ্বরচন্দ্র জীবিত থাকিতে তিনি আর কবিতা লিখিবেন না। এ প্রতিজ্ঞা তিনি রক্ষা করিয়াছিলেন। ঈশ্বরচন্দ্র একদিন মহেশচন্দ্রকে ঠাট্টা করিয়া বলিয়াছিলেন, “দাদা! লেজ ওটালে কেন?” তাহাতে মহেশচন্দ্র এই উত্তর করেন;–

 
“ওরে দুই ভায়ের দুই থাকলে লেজ,
থাকতে ন সংসার।
একে তোমার লেজে গেছে মজে,
সোণার লঙ্কা ছারখার॥”

 দশমবর্ধ বয়ঃক্রম কালে ঈশ্বরচন্দ্রের মাতৃবিয়োগ হয়। ইহার কিছু দিন পরে ইঁহার পিতা দ্বিতীয়বার দারপরিগ্রহ করেন। এই ঘটনায় ঈশ্বরচন্দ্র নিতান্ত বিরক্ত হইয়া কলিকাতায় মাতুলালয়ে চলিয়া আসেন। এখানে থাকিয়া ইংরাজী বিদ্যাভ্যাসের চেষ্টা করেন, কিন্তু অনুরাগের অভাবে তাহাতেও অধিক উন্নতি লাভ করিতে পারিলেন না। পঞ্চদশ বর্ষ বয়ঃক্রমকালে গুপ্তিপাড়ার গৌরহরি মল্লিকের কন্যা দুর্গামণির সহিত ইঁহার বিবাহ হয়। দুর্গামণি নাকি দেখিতে তেমন সুশ্রী ছিলেন না, অধিকন্তু কতকটা হাবাগোবার মত। কাজেই ঈশ্বরচন্দ্র এ বিষয়ে সুখী হইতে পারিলেন না।

 কলিকাতার ঠাকুরবংশের সহিত ঈশ্বরচন্দ্রের মাতামহের কিঞ্চিৎ ঘনিষ্ঠত ছিল। সেই সূত্রে ঈশ্বরচন্দ্র সর্ব্বদাই ঠাকুরবাড়ীতে যাতায়াত করিতেন। ক্রমে গোপীমোহন ঠাকুরের পৌত্র যোগেন্দ্রমোহনের সহিত ইঁহার বন্ধুত্ব জন্মে। উভয়েই সমবয়স্ক। কথিত আছে যে, ঈশ্বরচন্দ্রের সহবাসে যোগেন্দ্রমোহনের রচনাশক্তি জন্মিয়াছিল।