পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিক্ষার অবস্থা।
৫৭

সন্ত্রস্ত হইয়া পড়িয়াছিল। এক হিন্দু কলেজে রক্ষা ছিল না, তাহার উপর সংস্কৃত কলেজটা ইংরেজী কলেজ হইলে, বোধ হয় ঘরে ঘরে নরক-দৃশ্য দেখিতে হইত। সে সময় সংস্কৃত কলেজ ইংরেজী কলেজের অনুকরণে গঠিত হইলেও, সংস্কৃত শিক্ষার প্রচলন থাকায় উহা হিন্দু-সন্তান ব্রাহ্মণগণের তবুও কতক আশ্রয়স্থল হইয়াছিল।

  তদানীন্তন ইংরেজী শিক্ষার কুফলসন্দর্শনে ঈশ্বরচন্দ্রের পিতা, বোধ হয় ঈশ্বরচন্দ্রকে সংস্কৃত কলেজে প্রেরণ করেন। ঈশ্বরচন্দ্র ইংরেজী পড়িয়া, তদানীন্তন ইংরেজি শিক্ষিত ব্যক্তিবর্গের ন্যায় বিকৃত হইয়া না পড়েন, ইহাই ঠাকুরদাসের উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু ঠাকুরদাস মনে মনে এই উচ্চাকাঙ্খা পোষণ কলিতেন যে, বংশের সকলে যেমন অধ্যাপকমণ্ডলীর মধ্যে অগ্রণী হইয়া আসিতেছেন, দারিদ্র্যনিবন্ধন তিনি নিজে সেই সুখে বঞ্চিত হইলে ও যদি তাঁহার পুত্র সেই প্রকার অধ্যাপকমণ্ডলীল শীর্ষ স্থান অধিকার করিতে পারেন, তাহা হইলে তাঁহার পক্ষে পরম গৌরবের বিষয় হইবে। সুতরাং পুর্ব্ব হইতেই তিনি ঈশ্বরচন্দ্র সংস্কৃত শিক্ষা করিয়া যাহাতে স্বীয় বাটীতে চতুস্পষ্ঠী স্থাপনপূর্বক নানাস্থানের বালককে সংস্কৃত বিদ্যা দান দ্বারা যশস্বী হইতে পারেন, তজ্জন্য প্রস্তুত হইতেছিলেন; সুতরাং স্বজনগণের পরামর্শমতে তিনি ঈশ্বরচন্দ্রকে ইংরেজী শিক্ষায় ব্রতী করিতে রাজী হইলেন না। তিনি পুত্রকে সংস্কত কলেজে ভর্ত্তি করিয়া দিলেন। গদাধর তর্কবাগীশ মহাশয় সেই সময়ে সংস্কৃত কলেজে অধ্যয়ন করিতেন। তিনিও ঈশ্বরচন্দ্রকে সংস্কৃত কলেজে ভর্ত্তি করাইবার জন্য ঠাকুরদাসকে বিশেষ ভাবে উৎসাহিত করিয়াছিলেন।

 ঈশ্বরচন্দ্র সংস্কৃত কলেজে শিক্ষিত হইলেও, ইংরেজী শিক্ষার