পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সংস্কৃতে আধিকার।
৬৭

করিতেন। রাত্রি দশটার সময় আহারান্তে ঠাকুরদাস দুই ঘণ্টা জাগিয়া থাকিতেন। ঈশ্বরচন্দ্র তখন নিদ্রা যাইতেন। রাত্রি বারটার সময় পিতা তাঁহাকে তুলিয়া দিতেন। তার পর বালক সমস্ত রাত্রি পড়িতেন। এইরূপ গুরুতর পরিশ্রমে ঈশ্বরচন্দ্রকে মধ্যে মধ্যে পীড়া ভোগ করিতে হইত। এইরূপ অমানুষিক পরিশ্রম বিদ্যাসাগর যাবজ্জীবন করিয়াছিলেন। আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্র পাঠ্যাবস্থায় এইরূপ পরিশ্রম করিয়া থাকেন বটে; কিন্তু অনেকের ভবিষ্যৎ জীবনে তাঁহা দেখিতে পাওয়া যায় না। পরিশ্রমের কথা তো পরের কথা, দুই পয়সা, উপার্জ্জন করিতে শিখিলে, তাহারা বিলাস-মদ-লালসার সম্পূর্ণ পরবশ হইয় এক একটা “বাবুজী” হইয় পড়েন।

 নবম বর্ষ বয়সে ঈশ্বরচন্দ্র কলেজে ভর্ত্তি হইয়াছিলেন। একাদশ বৎসর বয়সে তাঁহার উপনয়ন হয়।

 দ্বাদশ বৎসরে ঈশ্বরচন্দ্র সংস্কৃত কলেজের কাব্য শ্রেণীতে প্রবেশ করেন। সেই সময় পণ্ডিতবর জয়গোপাল তর্কালঙ্কার সাহিত্যাধ্যাপক ছিলেন। মদনমোহন তর্কালঙ্কার ও মুক্তারাম বিদ্যাবাগীশ মহাশয় বালক বিদ্যাসাগরের সঙ্গে পাঠ করিতেন।[১] বিদ্যাসাগর মহাশয় অন্যান্য ছাত্র অপেক্ষা অল্পবয়স্ক ছিলেন; কিন্তু তাঁহার অদ্ভুত ধী-শক্তির পরিচয় পাইয়া অধ্যাপকমণ্ডলী বিস্মিত হইতেন। প্রথম বৎসরে ঈশ্বরচন্দ্র রঘুবংশ, কুমারসম্ভব, রাঘব-পাণ্ডবীয় প্রভৃতি সাহিত্য-পরীক্ষায় সর্ব্বপ্রধান স্থান অধিকার

  1. এই মদনমোহন উত্তরকালে সুকবির খ্যাতি পাইয়াছিলেন ও মুক্তারাম শ্রীমদ্ভাগগতের বঙ্গানুবাদ কার্য্যে লিপ্ত থাকিয়া সুপণ্ডিত হইয়াছিলেন।