পাতা:বিন্দুর ছেলে - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ye ਵਟਵ নারায়ণী শঙ্কিত হইয়া বলিলেন, বাপ রে । তা হ’লে আর কারো রক্ষে থাকবে না। দিগম্বরী বলিলেন, কেন বাড়ি কি ওর একলার যে মনে করলেই উঠোনের মাঝখানে এক অশ্বখ গাছ পুতে দেবে ? তোরা কি কেউ ন’স ? আমার গোবিন্দ কি কেউ নয় ? মা গো, অশ্বখগাছের উপরেখা এসে রাজ্যের কাক, চিল, শকুনি বাসা করবে, হাড়-গোড় ফেলে নোঙর করবেআমি ত নারাণি, তা হ’লে থাকতে পারব না। ওকে তোদের এত ভয়টা কি জন্যে শুনি ? আমার যদি বাড়ি হ’ত নারাণি, তা হলে দেখতুম, ও কত বড় বজাত! একদিনে সোজা ক’রে দিতুম। নারায়ণী মায়ের বুকের ভিতরটা যেন দৰ্পণের মত স্পষ্ট দেখিতে পাইলেন। কিছুক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়া জোর করিয়া হাসিয়া বলিলেন, ছেলেমানুষ, ওর এখন কি বুদ্ধি মা ! বুদ্ধি থাকলে কি কেউ নিজের বাড়ীর উঠোনে অশ্বখ গাছ পোতে ? দুদিন থাক, তার পরে ও আপনিই ফেলে দেবে । দিগম্বৰী বলিলেন, ফেলে দেবে! ও কেন দেবে, আমি নিজেই দেব। নারায়ণী কহিলেন, না মা, ও কাজ করে না, তোমাকে বলচি, ওকে চেন না। আমি ছাড়া ওর ভাইও ছাতে সাহস করবে না। মা ! আজকের দিনটা যাক । দিগম্বরী বিরক্ত হইয়া বলিলেন, আচ্ছা, আচ্ছা, তুই কাপড় ছাড়গে যা। দুপুর-বেলা নারায়ণী নিজের ঘরে বসিয়া বালিশের অড় সেলাই করিতেছিলেন, নেত্য ছুটিয়া আসিয়া খবর দিল, মা, সৰ্ব্বনাশ হ’য়েছে। দিদিমা ছোটবাবুর গাছ ফেলে দিয়েছে। সে ইস্কুল থেকে এসে আর কাউকে বাঁচতে দেবে না! নারায়ণী সেলাই ফেলিয়া ছুটিয়া আসিয়া দেখিলেন, সত্যই গাছ নাই।