পাতা:বিপ্রদাস - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৭

বন্দন বলিল, তোমারু শাশুড়ীর কানে গেলে হয়ত তোমাকে দুঃখ পেতে হৰে । *মা মেজদি ? সতী কহিল, হয় হবে। এখন থাক, কাকা শুনতে পাবেন। কিন্তু তোমার স্বামী-তিনিও যে নিজের কানেই সমস্ত শুনে গেলেন, এ অপরাধের মার্জনা বোধ করি তঁর কাছেও নেই ? সতী হাসিল, কহিল, অপরাধ যদি সত্যিই হয়ে থাকে। আমিই বা মার্জনা চাইব কেন ? সে বিচার আমি তাঁর ‘পরেই ছেড়ে দিয়ে নিশ্চন্ত হয়ে আছি। যদি থাক, নিজের চোখেই দেখতে পাবে। কাকা, তোমাকে আর কি এনে দেব বল ? সাহেব মুখ তুলিয়া কহিলেন, যথেষ্ট যথেষ্ট-আমার খাওয়া হয়ে গেছে মা, আর কিছুই চাইনে। এই বলিয়া উঠিয়া দাড়াইলেন। ক্রমশ: ষ্টেশনে যাত্ৰা করিবার সময় হইয়া আসিল ; নীচে গাড়ী-বারান্দায় মোটর অপেক্ষা করিতেছে, বিছানা ব্যাগ প্রভৃতি আর একখানা গাড়ীতে চালান হইয়াছে, সাহেব নিকটে দাড়াইয়া বিপ্ৰদাসের সহিত কথা কহিতেছেন, এমন সময়ে বন্দন কাপড় পরিয়া প্ৰস্তুত হইয়া কাছে আসিয়া দাড়াইল। কহিল, বাবা, আমি তোমার সঙ্গে যাব। পিতা 'বস্মিত হইলেন---এই রোদে ষ্টেশনে গিয়ে লাভ কি মা ? s বন্দনা বলিল, শুধু ষ্টেশনে নয়, কলকাতায় যােব। যখন বোম্বায়ে যাবে, আমি তোমার সঙ্গে চলে যাব । বিপ্ৰদাস অত্যন্ত আশ্চৰ্য্য হইয়া কহিলেন, সে কি কথা! তুমি দিনকয়েক থাকবে বলেই তা জানি । אי বন্দন উত্তরে শুধু কহিল, না । কিন্তু তোমার তা এখনাে খাওয়া হয়নি? ' না, দরকার নেই। কলকাতায় পৌছে খাব। তুমি চলে যােচ্ছ তোমার মেজদি শুনচেন ? বন্দনা কহিল, ঠিক জানিনে, আমি চলে গেলেই শুনতে পাবেন। বিপ্ৰদাস বলিলেন, তুমি না খেয়ে অমন করে চলে গেলে সে ভারি কষ্ট পাবে। বন্দন মুখ তুলিয়া বলিল, কষ্ট কিসের ? আমাকে ত তিনি নেমস্তন্ন করে আনেননি যে না খেয়ে চলে গেলে তীব্র আয়োজন নষ্ট হবে। তিনি নিৰ্বোিধ নয়, বুঝবেন। এই বলিয়া সে আর কথা না বাড়াইয়া দ্রুতপদে গাড়ীতে গিয়া বসিল। সাহেব মনে মনে বুঝিলেন কি একটা হুইয়াছে। না হইলে হঠাৎ অকারণে কোন-কিছু করিয়া ফেলিবার মেয়ে সে নয়। শুধু বলিলেন, আমিও জানতাম ও R