পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
৮৩

বলেন, গান্ধী-আরউইন আপোষ-নিষ্পত্তির পথের মাঝখানে ঝুলিয়া আছে ভগৎ সিংহের মৃতদেহ। সাহসিকতা ও তেজস্বিতার মূর্ত্ত বিগ্রহ, আত্মত্যাগ ও কষ্টসহিষ্ণুতার মহনীয় আদর্শ এই তিন বীর শহিদের প্রাণহরণে অত্যাচারী গভর্ণমেণ্টের সহিত আপোষের প্রস্তাব দেশবাসী কিছুতেই মানিতে পারে নাই! বিক্ষুব্ধ জনচিত্ত সেদিন জাতীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে একমাত্র সুভাষচন্দ্রকেই তাহাদের অন্তরের কথা বলিতে শুনিয়াছিল। সুভাষচন্দ্র করাচীতে “হিন্দুস্থান নওজোয়ান সঙ্ঘের” সভাপতি রূপে দেশবাসীর অন্তরের এই তীব্র বিক্ষোভকে ভাষায় ব্যক্ত করিয়াছিলেন। সুভাষচন্দ্র গান্ধী-আরইউন চুক্তির তীব্র প্রতিবাদ করেন। করাচী কংগ্রেসে সভাপতি পদে সর্দার প্যাটেলের নির্ব্বাচনেরও তিনি প্রতিবাদ করেন। সর্দার প্যাটেল প্রতিনিধি মণ্ডলী কর্ত্তৃক নির্ব্বাচিত না হইয়া সরাসরি ওয়াকিং কমিটি কর্ত্তৃক মনোনীত হইয়াছিলেন। সভাপতি নির্ব্বাচনের এই প্রথা কংগ্রেসের গঠনতন্ত্র বিরোধী হইলেও গান্ধী-আরইউন চুক্তি পাকাপাকি ভাবে সিদ্ধ করাইয়া লইবার জন্যই সর্দার প্যাটেলকে সভাপতিপদে বরণ করা হইয়াছিল।

 এই সময়ে বাঙ্‌লাদেশে সন্ত্রাসবাদের যুগ চলিতেছে। চট্টগ্রামের গোয়েন্দা কর্ম্মচারী আশানুল্লা এই সময় সন্ত্রাসবাদীদের হাতে নিহত হন। কংগ্রেস ওয়াকিং কমিটি এই সম্পর্কে বাঙ্‌লাদেশের উল্লেখ করিয়া যে বিবৃতি দেন তাহা মোটেই শোভন হয় নাই। সুভাষচন্দ্র ঐ বিবৃতির প্রতিবাদে এক বিবৃতি দেন। ইতিমধ্যে হিজলী বন্দীনিবাসে রক্ষীদলের বেপরোয়া গুলীচালনার ফলে কয়েকজন রাজবন্দী আহত ও নিহত হন। এই মর্ম্মান্তিক ঘটনা সকলকেই বিচলিত করিয়া তোলে; এমন কি, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ নিজেই উহার প্রতিবাদকল্পে আহূত এক জনসভায় সভাপতিত্ব করিতে কলিকাতায় ছুটিয়া আসেন এবং অগ্নিবর্ষী ভাষায় এই বর্বরোচিত বীভৎসতার তীব্র নিন্দা করেন। এই সময়ে সুভাষচন্দ্র বঙ্গীয় প্রাদেশিক