পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯০
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

আমাদের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র নীতির পার্থক্য সুস্পষ্টভাবে বুঝিয়া রাখা বিশেষ দরকার। আমাদের আভ্যন্তরীন নীতি নির্ণয় কালে এ-কথা বলা মারাত্মক ভ্রম হইবে যে, ভারতবাসীকে কম্যুনিজম ও ফ্যাসিজমের মধ্যে যে কোন একটা বাছিয়া লইতে হইবে। মানবের জ্ঞানরাজ্যে সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যাপারে কোন বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি বা মতবাদই একেবারে চূড়ান্ত বা শেষ কথা বলিয়া গ্রহণ করা যায় না।

 আধুনিক জাতিসমূহের বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক মতবাদ ও প্রতিষ্ঠানসমূহ তাহাদের বিশেষ বিশেষ ঐতিহাসিক ধারা, পরিবেশ ও প্রয়োজনের ফলমাত্র। মানব জীবনের মতই ইহারা পরিবর্ত্তন বা বিকাশের অধীন। অধিকন্তু ইহাও স্মরণ রাখিতে হইবে যে, বর্ত্তমান সময়ের কোন কোন অতিশয় চিত্তাকর্ষক প্রতিষ্ঠানগুলির এখনও পরীক্ষাকাল উত্তীর্ণ হয় নাই। এই সব প্রতিষ্ঠানকে সফল ও সার্থক বলিবার পূর্বে আরও কিছুকাল অপেক্ষা করিতে হইবে। ইত্যবসরে আমাদিগকে স্বাধীনভাবে বুদ্ধিবৃত্তির চালনাদ্বারা সব কিছু পরীক্ষা করিয়া দেখিতে হইবে। আমার ব্যক্তিগত অভিমত এই যে, বর্ত্তমানকালের বিভিন্ন আন্দোলনগুলির মধ্যে যাহা যাহা উপাদেয় ও হিতকর তাহাদের সমন্বয় সাধন করাই ভারতের কর্ত্তব্য। তাই, ইয়োরোপ ও আমেরিকায় যে সব আন্দোলন ও পরীক্ষা চলিতেছে সহানুভূতির সহিত তাহাদের পর্য্যালোচনা ও সমালোচনা করা আমাদের উচিত। কোন প্রকার পূর্ব সংস্কার বা পক্ষপাতের বশে কোন আন্দোলন বা পরীক্ষাকে অবহেলার দৃষ্টিতে দেখা আমাদের নির্বুদ্ধিতার পরিচায়ক হইবে।”

 সুভাষচন্দ্রের পক্ষে ইংলণ্ড, জার্ম্মানী ও রাশিয়া যাওয়া নিষিদ্ধ হওয়ায় তিনি দক্ষিণ ও পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলি পরিভ্রমণ করেন। ১৯৩৩ সালের জুলাই মাসে তিনি চেকোশ্লোভেকিয়ার রাজধানী প্রাগ পরিদর্শনে আসিয়া সেখানে দশদিন অবস্থান করেন। প্রাগে তাঁহার