পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯২
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

দাঁড়ায়। পিতৃদেবেকে শেষ দেখা দেখিবার জন্য সুভাষচন্দ্র ভারতে আসিবার অনুমতি প্রার্থনা করেন। অবশেষে ভারত সরকার তাঁহার প্রার্থনা মঞ্জুর করেন। ৪ঠা ডিসেম্বর তিনি তাঁহার পিতাকে দেখিবার জন্য ভারতে আগমন করেন। কিন্তু ২রা ডিসেম্বরেই তাঁহার পিতৃবিয়োগ ঘটে। ৩রা ডিসেম্বর সুভাষচন্দ্র বিমানযোগে করাচী পৌঁছিলে শ্রীযুক্ত জামসেদ মেটার নিকট তাঁহার পিতার মৃত্যু সংবাদ শোনেন।

 বিমান হইতে করাচী অবতরণ করিবামাত্র শুল্ক বিভাগের জনৈক কর্ম্মচারী ও একজন গোয়েন্দা তাঁহার মালপত্র খানাতল্লাশ করিয়া “ইণ্ডিয়ান স্ট্রাগল” এর একখানি টাইপ-করা কপি হস্তগত করেন। সেখান হইতে সুভাষচন্দ্র বিমান যোগেই কলিকাতা আসেন। দমদম বিমানঘাঁটিতে সংশোধিত ফৌজদারী আইন অনুসারে তাঁহার উপর এক আদেশ জারী করা হয়। এই আদেশ অনুসারে তাঁহাকে তৎক্ষণাৎ সরাসরি ৩৮।২নং এলগিন রোডের বাড়ীতে যাইতে এবং পুনরাদেশ পর্য্যন্ত সেখানেই অবস্থান করিতে বলা হয়। উক্ত আদেশ অনুযায়ী তিনি ঐ বাড়ীর বাহিরে যাইতে বা কাহারও সহিত দেখা সাক্ষাৎ করিতে পারিবেন না। তাঁহার পরিবারস্থ লোক যাহারা ঐ গৃহে অবস্থান করিতেছে তাহারা ছাড়া কাহারও সহিত পত্রব্যবহার, আলাপ-আলোচনা ও সংবাদ আদানপ্রদান করিতে পারিবেন না। তাঁহার নামের চিঠি-পত্র, টেলিগ্রাম প্রভৃতি সমস্তই না খুলিয়া পুলিশের হস্তে সমর্পণ করিতে হইবে। অর্থাৎ নিজের বাড়ীতেই তাঁহাকে বন্দী করিয়া রাখা হয়। সাতদিনের মধ্যে দেশত্যাগ করিবার নির্দ্দেশ দিয়া তাঁহার উপর আর একটি আদেশ জারী করা হয়। তাঁহাকে যেন একমাস থাকিতে দেওয়া হয় এই অনুরোধ জানাইয়া তিনি গভর্ণমেণ্টের নিকট একখানি পত্র লিখেন। ঐ পত্রে তিনি লিখেন যে বিদশে মুক্ত অবস্থায় থাকার চেয়ে স্বদেশে বন্দী অবস্থাই তাঁহার নিকট অধিকতর কাম্য। অবশেষে পিতার শ্রাদ্ধানুষ্ঠান পর্য্যন্ত