পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৮
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

সেখানে তিনি ঘোষণা করেন যে, কংগ্রেস সরকার-কল্পিত যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম চালাইবে। লণ্ডনে আয়ার্ল্যাণ্ডের রাষ্ট্রপতি ডি, ভ্যালেরার সহিত তাঁহার দ্বিতীয়বার সাক্ষাৎ হয়।

 ১৯৩৮ খৃষ্টাব্দের ১৮ই জানুয়ারী কংগ্রেসের জেনারেল সেক্রেটারী আচার্য্য কৃপালনী ঘোষণা করেন যে, সুভাষচন্দ্র হরিপুরায় নিখিল ভারত জাতীয় কংগ্রেসের ৫১তম অধিবেশনের সভাপতি নির্ব্বাচিত হইয়াছেন। সেই বৎসর সভাপতি পদের জন্য শ্রীযুক্ত সুভাষচন্দ্র বসু, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ, পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু ও খান আবদুল গফুর খাঁন—এই চারিজনের নাম প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু অন্যান্য সকলেই সুভাষচন্দ্রের পক্ষে তাঁহাদের নাম প্রত্যাহার করেন ও সুভাষচন্দ্র বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্ব্বাচিত হন। ২৪শে জানুয়ারী সুভাষচন্দ্র লণ্ডন হইতে কলিকাতায় প্রত্যাবর্ত্তন করেন। ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সমরে আপোষহীন সংগ্রামের শ্রেষ্ঠ সৈনিক অক্লান্তকর্ম্মী এই বিপ্লবী তরুণকে রাষ্ট্রপতি পদে বরণ করিয়া দেশবাসী স্বাধীনতা যুদ্ধের লক্ষ লক্ষ শহিদকে সন্মানিত করেন ও কংগ্রেসের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে আরও মহিমামণ্ডিত করিয়া তোলেন। দুঃখনির্য্যাতনকে হাসিমুখে বরণ করিয়া যে শক্তিধর পুরুষ কঠোর অগ্নপরীক্ষায় সমুত্তীর্ণ হইয়াছেন আজ দেশবাসী তাঁহার গৌরবোন্নত শিরে বিজয় মুকুট পরাইয়া দিল। ভারতবাসীর আশা-আকাঙ্ক্ষা ও জাতীয় জীবনস্পন্দনের মহাকেন্দ্র নিখিল ভারত জাতীয় মহাসভার সভাপতি পদ পরাধীন ভারত সন্তানের পক্ষে শ্রেষ্ঠ সম্মান—সুভাষচন্দ্র এই সম্মানেরঅধিকারী হইয়া বাঙালীর মুখোজ্জ্বল করিলেন।

 ভারতবর্ষের জাতীয় আন্দোলনের মধ্যে দুইটি স্রোত বহিয়া চলিয়াছে। একটি স্রোতের অগ্রভাগে রহিয়াছে পুঁজিপতি, জমিদার ও মিলমালিকগণ। বৃটিশ ব্যবসায়ীদের সমান সুযোগ হইতে বঞ্চিত হওয়ার ফলে বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ইঁহাদের আক্রোশ। এদেশে কলকারখানা স্থাপন