পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১০১

জনতা আমাকে যে অভ্যর্থনা জ্ঞাপন করিয়াছে, তাহা আমাকে অভিভূত করিয়াছে। এই শোভাযাত্রার বর্ণনা প্রদান করা আমার পক্ষে সম্ভব নহে।” স্বর্গত বিটলভাই প্যাটেলের স্মৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের নিমিত্ত অধিবেশন মণ্ডপের নাম রাখা হয় ‘বিটল নগর’। কংগ্রেসের ৫১তম অধিবেশনকে স্মরণীয় করিবার জন্য মণ্ডপের ৫১টি তোড়নে ৫১টি জাতীয় পতাকা উড়িতে থাকে, ৫১টি জাতীয় সঙ্গীত গীত হয়, এবং ৫১টি বলিবর্দ্দ কর্ত্তৃক সভাপতির রথ বাহিত হয়।

 ১৯শে ফেব্রুয়ারী অপরাহ্ণে বিচিত্র সমারোহে ও মনোহর দৃশরাজির মধ্যে ‘বিটলনগরে’ ভারতীয় জাতীয় মহাসভার ৫১তম অধিবেশন আরম্ভ হয়। সুভাষচন্দ্র এই জাতীয় যজ্ঞের ঋত্বিক। ভারতের বিভিন্ন স্থান হইতে আগত দুই লক্ষাধিক নর-নারীর সমাবেশে ‘বিটলনগর’ জনসমুদ্রে পরিণত হইয়াছে। বাঙ্‌লার একদল গায়িকা কর্ত্তৃক সুললিত কণ্ঠে বন্দেমাতরম্ সঙ্গীত গীত হওয়ার পর অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতি গোপালদাস সমাগত প্রতিনিধি ও দর্শক বৃন্দকে সাদর সম্ভাষণ জানাইয়া তাঁহার সংক্ষিপ্ত অথচ চিত্তাকর্ষক অভিভাষণ পাঠ করেন। অতঃপর বিপুল জয়ধ্বনির মধ্যে মাল্যবিভূষিত রাষ্ট্রপতি বক্তৃতামঞ্চে আরোহণ করেন। শ্রোতৃবৃন্দ মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায় তাঁহার জ্ঞানগর্ভ অভিভাষণ শ্রবণ করে।

 হরিপুরা কংগ্রেসে রাষ্ট্রপতি সুভাষচন্দ্রের অভিভাষণের সারমর্ম নিয়ে প্রদত্ত হইল:—

 সাম্রাজ্যের পরিণতি—গ্রেট-ব্রিটেনের প্রতি সতর্কবাণী— মানব-ইতিহাসে সাম্রাজ্যসমূহের উত্থান-পতনই সর্ব্বপ্রথম আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। প্রাচ্যের মত প্রতীচ্যের ক্রমবর্দ্ধমান সাম্রাজ্যসমূহ একসময় উন্নতির চরম শিখরে আরোহণ করিয়াছে এবং ক্রমশঃ ক্ষীণায়ু হইতে হইতে আবার সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হইয়াছে। প্রাচীন যুগের রোমক সাম্রাজ্য এবং বর্ত্তমানযুগের তুর্কী ও অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্যসমূহ এই