পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৬
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

হইলে ইউরোপ, এশিয়া, আফ্রিকা ও আমেরিকায় জাতীয় মহাসভার বিশ্বস্ত প্রতিনিধি নিয়োগ করিতে হইবে। এতদ্ব্যতীত, আন্তর্জ্জাতিক সভা বা সম্মেলনে ভারতবর্ষকে যোগদান করিতে হইবে। এইরূপ সভাসম্মেলনে যোগদানের ফলে ভারতের প্রয়োজনীয় প্রচারকার্য্যের উদ্দেশ্য সিদ্ধ হইবে এবং বিশ্বজনমতের নিকট ভারতের দাবী স্বীকৃত হইবে।

 এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে—বিশেষতঃ জাঞ্জিবার, কেনিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, মালয় ও সিংহলের প্রবাসী ভ্রাতৃবৃন্দের অভাব-অভিযোগ ও সমস্যার বিষয় আমরা যেন বিস্মৃত না হই। তাঁহাদের সম্পর্কে কংগ্রেস সর্ব্বদা গভীর মনোযোগ প্রদান করিয়াছেন এবং ভবিষ্যতেও করিবেন। আমরা এখনও দাস-জীবন যাপন করিতেছি বলিয়া তাঁহাদের জন্য প্রয়োজনানুরূপ কিছু করা হয়ত আমাদের পক্ষে সম্ভব হয় নাই। স্বাধীন ভারত বিশ্বের রাজনীতিক্ষেত্রে বিরাট শক্তিরূপে আত্মপ্রকাশ করিবে; তখন প্রবাসী ভারতীয়দের স্বার্থসংরক্ষণে কোন বাধার সৃষ্টি হইবে না।

 এই প্রসঙ্গে পারস্য, আফগানিস্থান, নেপাল, চীন, ব্রহ্ম, শ্যাম, মালয়, পূর্ব্ব ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ ও সিংহল প্রভৃতি প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহের সহিত সংস্কৃতিগত ঘনিষ্টতা স্থাপনের আবশ্যকতার উল্লেখ করিতে চাই। এই সমস্ত রাষ্ট্রের সহিত পারস্পরিক পরিচয় ও সহযোগিতা থাকিলে উভয় পক্ষেরই কল্যাণ হইবে। ব্রহ্ম ও সিংহলের সহিত আমাদের সংযোগ বহু যুগের বলিয়া এই দুইটি রাষ্ট্রের সহিত ঘনিষ্ঠতম সংস্কৃতিগত সম্পর্ক রাখিতে হইবে।

 আটক ও রাজনৈতিক বন্দী—এক্ষণে আমি আটক এবং রাজনৈতিক বন্দীদের সমস্যার প্রতি আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করিতেছি। উহাই বর্ত্তমানে আমাদের প্রধান সমস্যা। বন্দিগণের অনশনের ফলে এই সমস্যাটি জনসাধারণের নিকট আরও সুস্পষ্ট হইয়া উঠিয়াছে।