পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১১৯

 অভিভাষণের প্রথমেই তিনি ঘোষণা করেন, “ব্রিটীশ সাম্রাজ্যকে হয় ধ্বংসপ্রাপ্ত হইতে হইবে অথবা স্বাধীন জাতিসমূহের স্বেচ্ছাগঠিত যুক্তরাষ্ট্রে পরিণত হইতে হইবে। ১৯১৭ সালে জারের সাম্রাজ্য ধ্বংস হইয়াছিল এবং সেই ধ্বংসস্তুপের ভস্মরাশি হইতেই সোভিয়েট রাশিয়ার উদ্ভব হইয়াছে। ব্রিটিশের পক্ষে রাশিয়ার ইতিহাস হইতে শিক্ষা লাভের এখনও অবকাশ রহিয়াছে। ব্রিটেন ইহার সুযোগ গ্রহণ করিবে কী?” তিনি আরও ঘোষণা করেন যে, ব্রিটীশ জনসাধারণের স্বাধীনতা রক্ষা হইতে পারে যদি ব্রিটেন একটি সোস্যালিষ্ট রাষ্ট্রে পরিণত হয়; এবং সোশ্যালিষ্ট রাষ্ট্র গঠন করিতে হইলে ব্রিটীশ সাম্রাজ্যের বন্ধন শিথিল করিতে হইবে ও ঔপনিবেশিক অধিকার হস্তচ্যূত করিতে হইবে। যেহেতু, “ব্রিটেনের পূঁজিবাদী শাসকশ্রেণী ও উপনিবেশ সমূহের মধ্যে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক বিদ্যমান। বহুদিন পূর্ব্বে লেনিন বলিয়াছিলেন ‘কতকগুলি জাতির দাসত্বই গ্রেট ব্রিটেনের প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিকে অধিকতর শক্তিশালী ও পুষ্ট করিতেছে।’ ইংলণ্ডের বাহিরে বিভিন্ন উপনিবেশ ও অধীন দেশ সমূহ শোষণক্ষেত্ররূপে রহিয়াছে, মুখ্যতঃ এই কারণেই ব্রিটিশ অভিজাততন্ত্র ও বুর্জোয়া শ্রেণীর অস্তিত্ব এখনও বজায় আছে।” তিনি আরও বলেন—

 “এই সব উপনিবেশ ও অধীনদেশ সমূহ স্বাধীনতা লাভ করিলে নিঃসন্দেহে গ্রেট ব্রিটেনের ধনতান্ত্রিক শাসকশ্রেণীর বিলোপ ঘটিবে; এবং সমাজতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা হইবে। অতএব ইহা নিঃসন্দেহে বুঝিতে হইবে যে, উপনিবেশতন্ত্রের উচ্ছেদ ব্যতীত ইংলণ্ডে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা অসম্ভব। আমাদের মধ্যে যাহারা ভারতের স্বাধীনতার জন্য ও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্গত অন্যান্য অধীন দেশের মুক্তির জন্য সংগ্রাম করিতেছেন, তাঁহারা সঙ্গে সঙ্গে ব্রিটিশ জাতির অর্থনৈতিক মুক্তিসাধনের জন্যও সংগ্রাম করিতেছেন, সন্দেহ নাই।” যতদিন ব্রিটেন ঔপনিবেশিক অধিকার কায়েম রাখিবে ততদিন ব্রিটেনের