পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২০
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

আপামর জনসাধারণের সত্যিকারের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হইতে পারিবে না—কেবল উপনিবেশসমূহকে পূর্ণ স্বাধীনতা প্রদানের দ্বারাই ব্রিটেনে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের পত্তন হইতে পারে। আমরা ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের দ্বারা পরোক্ষভাবে ব্রিটীশ জনসাধারণের অর্থনৈতিক মুক্তিলাভে সহায়তা করিতেছি—রাষ্ট্রপতি এই ঘোষণার দ্বারা পৃথিবীর সমস্ত পরাধীনদেশসমূহের এবং সমাজসচেতন ও গণতান্ত্রিক মনোভাবসম্পন্ন জনগণের প্রাণের আকুতিকে ভাষা দিয়াছেন।

 ‘সাম্যবাদ সংঘে’ সুভাষচন্দ্র One-party State গঠনের পক্ষে মত প্রচার করেন কিন্তু হরিপুরা কংগ্রেসে তাঁহার সে মত সম্পূর্ণ পরিবর্ত্তিত হয়। স্বাধীন ভারতে কংগ্রেসের স্থান ও কার্য্য কি হইবে সে সম্বন্ধে তিনি বলেন:—“আমার সন্দেহ হয়, আমাদের জাতীয় সংগ্রামের ইতিহাসে কংগ্রেসের যথাযথ কর্ত্তব্য ও অংশ সম্বন্ধে আমাদের কংগ্রেস কর্ম্মীদের অনেকেরই কোন স্পষ্ট ধারণা ও সুনির্দ্দিষ্ট চিন্তা নাই। আমাদের কোন কোন বন্ধু মনে করেন কংগ্রেসের স্বাধীনতালাভ-রূপ অভীষ্ট সিদ্ধ হইলেই কংগ্রেসী দলের বিলোপ সাধন করা হইবে। এইরূপ চিন্তা সর্ব্বৈব ভ্রমপ্রসূত। স্বাধীনতালাভের পরে কংগ্রেসী দল ভাঙ্গিয়া দিবার কোন প্রশ্নই উঠিতে পারে না। প্রকৃত পক্ষে, কংগ্রেসকে ক্ষমতা অধিকার করিয়া শাসন কার্য্যের দায়িত্ব গ্রহণ করিতে হইবে ও জাতীয় পুনর্গঠনের কর্ম্মপন্থা কার্য্যকরী করিতে হইবে। কেবল তখনই কংগ্রেসের কর্ত্তব্য পূর্ণরূপে সম্পন্ন হইবে। বলপূর্ব্বক কংগ্রেসের বিলোপ সাধনের ফলে দারুণ বিশৃঙ্খলা ঘটিবে। যুদ্ধোত্তর ইয়োরাপের প্রতি দৃষ্টিপাত করিলে আমরা দেখিতে পাই যে, যে দেশে ক্ষমতা অধিকার করিয়া বিজয়ীদল পুনর্গঠনের দায়িত্ব ও কর্ম্মপন্থা গ্রহণ করিয়াছে, কেবল সেই সেই দেশগুলিতেই সুশৃঙ্খল ও অব্যাহত উন্নতি সম্ভব হইয়াছে। এইরূপ তর্ক উঠিতে পারে যে, ক্ষমতা লাভের পর বিজয়ী দল রাষ্ট্রের কর্ণধার হইলে, ঐ রাষ্ট্র একটি